পৃথিবীর নানা কোন থেকে আনা, প্রায় হাজারের উপর প্রজাতির ঔষধি গাছ দিয়ে সাজানো তুলুস কেন্দ্রের বোটানিক্যাল গার্ডেন। শহরের একদম কেন্দ্রে, ছুটির উজ্জ্বল দুপুরে তুলুসবাসিদের সময় কাটানোর এক অতি প্রিয় জায়গা। এই পার্কের শান্ত পরিবেশে, বেঞ্চে বসে অনেকেই লাইব্রেরী থেকে আনা বই শেষ করে দেয় – ফরাসীরা বই পড়তে খুবই ভালোবাসে, আর পড়ার জন্যে পার্কের সবুজ ঘাসের গালিচা কিংবা পার্কের বেঞ্চ বেছে নিতে আরও ভালোবাসে।
যাইহোক, শুধু যে দেশ বিদেশের গাছ গাছড়ারাই তুলুসের এই বোটানিক্যাল গার্ডেনে শোভা দেয়, তা কিন্তু নয়, পাশে এক ঘেরা জায়গায়, দেখা হয়ে যায় ভারতবর্ষের ময়ূরের সঙ্গে – আর সেই ময়ুরের পেখম মেলা দেখার জন্যে বাচ্চারা অনেকেই ভিড় জমায়। তাছাড়া, পাতিহাঁস, রাজহাঁস, পায়রারা তো আছেই। আঠারো শতাব্দীতে তুলুসের সায়েন্স সোসাইটি এই বাগান তৈরির কাজ শুরু করে, তারপর, ধীরে ধীরে এই বাগানের পরিধি ও সংগ্রহ বাড়তে থাকে। এমনি জল, ঝর্ণা ইত্যাদি দিয়ে সুন্দর ল্যান্ডস্কেপও তৈরি করা হয়।
তুলুসের কেন্দ্রে এই বাগানের অবস্থান যেন তুলুসকে দুই ভাগে ভাগ করেছে – নবীন ও প্রাচীন। এই বাগান যেখানে শুরু হয়েছে, সেখানে তুলুসের প্রাচীন স্থাপত্যের আধিপত্য বেশী। আবার যেখানে এই বাগান শেষ হয়েছে, সেখানে শুরু হয়েছে আধুনিক স্থাপত্য, আধুনিক বিল্ডিং। আর এক দিকে দুই বড় রাস্তা ও পাশে, তুলুসের আরও দুই বাগান রয়্যাল গার্ডেন ও গোল বাগানকে আলাদা করেছে – অবশ্য লোহার তৈরি সুন্দর সেতু ধরে ঐ দুই বাগানেও অনায়াসে যাতায়াত করা যায়। আবার, তুলুসের ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়াম বাগানের একদিকের সীমানা নির্ধারণ করেছে।
যাইহোক, বছরের প্রতিটি ঋতুতে এই বাগান সাজে নতুন ভাবে – সামারের উজ্জ্বলতায় রঙিন উজ্জ্বল বাগানই হোক কিংবা শীতে ধূসর রিক্ত বাগানই হোক, তুলুসবাসির কাছে কিন্তু এই বাগানের আকর্ষণ সমানই থাকে। দিনের শেষে সবুজের পথ ধরে হেঁটে যেতে কার না ভালো লাগে।