Paris in the morning is beautiful/Paris in the afternoon is charming/Paris in evening is enchanting/ Paris after midnight is magic.
রাতের প্যারিসের স্ট্যাচু অফ লিবার্টির পেছনে আলোকিত আইফেল টাওয়ারের দৃশ্য অপূর্ব, সত্যি প্যারিস সিটি অফ লাইট, রাতের প্যারিস আলোয় ঝলমল করে – তুলুসের বাড়ীতে রবিবারের এক আড্ডায় প্যারিস বেড়ানোর গল্পের ফাঁকে যখন কথাটি বললাম, অনেকেই চমকে হেসে আমার দিকে তাকাল। কোলকাতার বন্ধুটি হাসতে হাসতেই বলল – কি যে বলছ না? প্যারিসে কেন স্ট্যাচু অফ লিবার্টি থাকবে? ও তো আমেরিকায়, নিউ ইয়র্ক সিটিতে।
আমি আর খুব বেশী তর্কের দিকে না গিয়ে তাড়াতাড়ি গুগুল খুলে ওদের দেখাতে বসলাম।
বললাম – ‘আমিও জানতাম না। লুভ্যেরে মিউজিয়ামের সামনের রাস্তায় এক পেইন্টারের পেইন্টিংএ স্ট্যাচু অফ লিবার্টি ও আইফেল টাওয়ার একসঙ্গে দেখে ভেবেছিলাম হয়তো শিল্পীর কল্পনা। কল্পনায় দুই মনুমেন্টকে এক ক্যানভাসে এঁকেছে। শিল্পীরা যা করে আর কি। সেই কথা হেসে এক ফ্রেঞ্চ বন্ধুকে বলার পরে ও বড় বড় চোখে তাকিয়ে বলেছিল, সেকি তুমি জানো না! ফ্রান্সের কাছেও স্ট্যাচু অফ লিবার্টি আছে। ইনফ্যাক্ত, আমেরিকার স্বাধীনতার প্রতীক স্ট্যাচু অফ লিবার্টি আমেরিকার মানুষকে ফ্রান্সের মানুষের উপহার, আমেরিকার স্ট্যাচু অফ লিবার্টি ফ্রান্সেই তৈরি হয়েছিল এবং জাহাজে করে পাঠানো হয়েছিল। আবার প্যারিসের আমেরিকান কমুনিটি প্যারিস সিটিকে স্ট্যাচু অফ লিবার্টি উপহার দেয়।’
সিয়েন নদীর মাঝে এক কৃত্রিম দ্বীপ ile aux Cygnes এ রোমান দেবী Libertas এর অনুকরণে স্বাধীনতার প্রতীক স্ট্যাচু অফ লিবার্টি দাঁড়িয়ে আছে। কোলকাতার বন্ধুটি একবার প্যারিস ঘুরে এসেছে কিন্তু প্যারিসের স্ট্যাচু অফ লিবার্টি দেখেনি। তাই তাড়াতাড়ি পরের প্যারিস ভ্রমনের তালিকায় স্ট্যাচু অফ লিবার্টিকে প্রথমেই রাখল। হেসে বলল – এবার নিশ্চয়ই দেখবো।
ইউরোপের যে কোন শহরকেই রাতের আলোয় অপরূপ মোহময় লাগে। কিন্তু, প্যারিস! এ এক অন্য যাদু নগরী। রাতে আলোয় সাজানো ল্যুভরে মিউজিয়ামের সামনে দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে অপূর্ব আলোর মায়াজালে যে কোন মানব বাঁধা পড়ে যায়। হাজার বছরের ইতিহাসের গায়ে গায়ে আলোর বিচ্ছুরণ যেন এক অন্য জগতের সন্ধান দেয়। সারা দিনের জনস্রোতের ব্যস্ততার শেষে রাতে ধীরে ধীরে স্তিমিত হয় এই শহরের জনস্রোত, সিয়েন নদীর কালো জলে ভাসে কিছু টুরিস্ট বোট, আর ইতিহাস জেগে ওঠে আলো আধারির খেলা নিয়ে, ঐতিহাসিক অশরীরী যেন ঘুরে ফেরে এই শহরের অলি গলিতে। আর সেই ঐতিহাসিক আলোর পথ ধরে আলোকিত Pont Alexandre III পার হয়ে হাঁটি মাঝরাত পর্যন্ত, তবুও মনে হয় দেখা শেষ হল না।