যে কোন নতুন জায়গার মানুষের জীবন যাপনের ছবি দেখতে হলে অতি অবশ্যই সেই জায়গার বাজার দেখতে হয় – স্থানীয় বাজার যেন যুগ যুগ ধরে মানুষের জীবন যাপনের ছবি বহু সযত্নে ধরে রেখেছে।
আর পর্তুগালের পোর্তো শহরে গিয়ে, সেই শহরের স্থানীয় মানুষের জীবন যাপনের ছবি দেখতে স্থানীয় বাজারে তো যেতেই হয় – পোর্তো শহরের কেন্দ্রের বিখ্যাত বাজার – The Bolhão Market । ২০০৬ এ এই বাজারকে place of public interest ঘোষিত করা হয়েছিল।
উনিশ শতাব্দীতে তৈরি, পোর্তো শহরের এই বাজার নিও-ক্লাসিক্যাল স্থাপত্যের নিদর্শন। দুই তলার এই বাজারে, মাছ, মাংস, ফল, সবজি, সুভেনির থেকে শুরু করে ফুল সবই পাওয়া যায়। সাধারণত এই বাজারে পোর্তো শহরের স্থানীয় চাষিরা তাদের নিজেদের ফসল বিক্রি করে।
বাজারে ঢুকে হাঁটতে হাঁটতে চোখে পড়ে – বাজারটিকে কি ভাবে বিভিন্ন অংশে ভাগ করা হয়েছে – এক দিকে আছে শুধুই মাছ ও মাংস, এক দিকে ফল ও সবজি ও আরেক দিকে আছে ফুল।
তাছাড়া, বাজারের মধ্যে স্থানীয় রেস্টুরেন্টও আছে। স্থানীয় ও ঘরে তৈরি রান্নার স্বাদ পেতে অনেকেই সেই রেস্টুরেন্টে খেতে যায়। কফি শপও দেখা যায় – বাজার সেরে, কফি শপে বসে কফির কাপে চুমুক দিয়ে ক্লান্তি জুরিয়ে নিতে নিতে স্থানীয় মানুষের আনাগোনা দেখতে, কেনাকাটি দেখতে, স্থানীয় জীবনের অনুরণন শুনতে অনেকেরই ভালো লাগে। তাই এই বাজার পোর্তো শহরের অন্যতম টুরিস্ট গন্ত্যব্য। আর সেই জন্যেই এই স্থানীয় বাজারেও অনেক সুভেনিরের দোকানও দেখতে পাওয়া যায়।
ইউরোপের বাজারে, রবিবারের ছুটির দিনে মানুষের জিনিস কেনাকাটির নিমগ্নতা দেখতে বেশ ভালো লাগে – হাসি হাসি সুখি মুখে জিনিস দেখে দেখে, চেখে কেনার মধ্যে ওদের চোখ মুখ থেকে যেন খুশী ছলকে ছলকে ওঠে।
আসলে কেনা কাটির সঙ্গে মানুষের সুখ হরমোনের এক সংযোগ আছে – তাই বাজারে যখন মানুষ জিনিস কেনে প্রায় সময়ই মানুষ সুখী থাকে, নিমগ্ন থাকে। আর, বাজার মানে তো – বেঁচে থাকার এক তীব্র আবেদন, জীবনের এক প্রতিশ্রুতি, প্রয়োজন।
OK