শুনেছি, বহু প্রাচীন কাল থেকেই ভারতবর্ষ ও মিশরের মানুষ এই বাদামটি খুবই পছন্দ করত। তারপর তো ধীরে ধীরে সমস্ত পৃথিবীর মানুষই এই বাদামের গুণমুগ্ধ হয়েছে। যে কোন মিষ্টি খাদ্যে এই বাদামের যুগলবন্দী বেশ ভালই যায়।
তারপর, এই কিছুদিন আগে শুনি, কাঠবাদামের নাকি প্রচুর গুণ আছে। ওজন কমানোর জন্যে কাঠবাদাম নাকি মহৌষধ।
অতিরিক্ত ওজন কমানোতে কাঠ বাদামের কি ভূমিকা থাকতে পারে? শুনেছি, বাদাম খেলে তো ওজন বাড়ে? কিন্তু, কাঠবাদাম, যদিও বাদাম হিসাবে বিশ্ব পরিচিত – কিন্তু, কাঠবাদাম আসলে আল্মন্ড গাছের বিচি।
আর ঐ ছোট বীচি, যাবতীয় ভিটামিন, মিনারেল, ম্যাগনেসিয়াম, প্রোটিন, ভাল ফ্যাটি অ্যাসিড, অ্যামাইনো অ্যাসিড ইত্যাদি দিয়ে একদম পরিপূর্ণ।
অনেকেই বলে, প্রতিদিন সকালে খালি পেটে চারটে করে কাঠবাদাম খাওয়ার, প্রচুর উপকারিতা আছে।
যেমন, কাঠবাদামের স্বাস্থ্যকর monounsaturated fatty acid হৃদপিণ্ডের স্বাস্থ্যকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে, কাঠবাদাম রক্তের বাজে LDL cholesterol কমিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে।
তাছাড়া, রক্ত চাপ ও রক্তে চিনির মাত্রা কন্ট্রোল করতে কাঠবাদামের জুরি মেলা ভার। তাই, দেখা গেছে, বিশেষ করে যাদের ডায়াবেটিস ও রক্তচাপ আছে, তাদের খাদ্য তালিকায় কাঠবাদাম থাকা খুবই জরুরি।
অনেক সময়, আমাদের ধমনীর দেওয়াল গুলোতে মারাত্মক ক্ষতিকারক ফ্যাট, কলেস্টরল জমে গিয়ে ধমনীকে ছোট করে ফেলে ও রক্ত চলাচলে ব্যঘাত ঘটে – যার ফলে হার্টের অসুখ দেখা যায়। এই কাঠবাদামের মধ্যে এমন এক উপকারী ফ্যাট আছে, যা ধমনীর ঐ মারাত্মক ক্ষতিকারক plaque buildup এর হাত থেকে বাঁচায়। এবং, রক্তে ভাল কলেস্টরলের মাত্রা ঠিক রাখে।
তারপর, কাঠবাদাম যে মস্তিষ্কের কর্ম ক্ষমতা বাড়ায় তা বোধহয় অনেকেই জানে। কাঠবাদামকে অন্যতম শ্রেষ্ঠ ‘ব্রেন ফুড’ বললেও ক্ষতি নেই। কারণ, কাঠবাদামে মস্তিষ্কের জন্যে খুবই উপকারি দুইটি উপাদান – riboflavin ও L-carnitine আছে। যা মস্তিষ্কের স্নায়ুকে সতেজ রাখে।
সে তো গেল, শরীরের আভ্যন্তরীণ স্বাস্থ্যে কাঠবাদামের ভুমিকার কথা। সুন্দরীরা যে কারনে কাঠবাদাম খেয়ে দিন কাটিয়ে দিতে পারে, তা না বললে যে অসম্পূর্ণ বলা হবে। কাঠবাদামের ভিটামিন ই, ও প্রচুর আন্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের জন্যে খুবই উপকারী। ত্বকের উজ্জ্বলতা ও যৌবন ধরে রাখতে কাঠবাদাম নাকি এক নম্বরে আসে।
তারপর, কাঠবাদাম, যে কোন খাদ্যে উপস্থিত ভিটামিন ও অন্যান্য উপকারী উপাদানের nutrient absorption ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। এবং অন্ত্রের হজম শক্তিও বাড়ায়।
তাছাড়া, কাঠবাদাম হাড় ও দাঁত শক্ত রাখে। কাঠবাদামের, এতো গুণের কথা শুনে, কাঠবাদাম না খেয়ে কি আর থাকা যায়? তাই, আজ থেকে, কাঠবাদাম প্রতিদিন – চারটে করে।