রাজ্যের লোক রুটি খেতে পাচ্ছে না – কেন ওরা তো কেক খেতে পারে, কেক খাক।
ফরাসী বিপ্লবের সময়ে ফরাসী রানীর বিখ্যাত ও সংবেদনহীন উক্তি, আজও মানুষ মনে রেখেছে! কিন্তু কেন?
পৃথিবীর ইতিহাস মানুষকে নানা কারণে মনে রাখে, কাউকে মনে রাখে তার বুদ্ধিমত্তার জন্যে, কাউকে মনে রাখে তার রাজনৈতিক ব্যক্ত্বিত্বের জন্যে, সাহসের জন্যে, কাউকে তার বোকামি, হিংস্রতা, ক্রুরতা, দয়ার জন্যে, পাগলামির জন্যে – যেমন, রোমান সম্রাট নিরোকে আজও ইতিহাস মনে রেখেছে তার ক্রুরতা ও পাগলামির জন্যে – রোম সাম্রাজ্য পুড়ে ছারখার হয়ে যাচ্ছে, আর সম্রাট নিরো এক মনে বেহালা বাজাচ্ছে – তার কথা কে না জানে।
কিংবা, কাউকে হয়তো শুধুই তার সংবেদনহীন উক্তির জন্যে মনে রাখে – যেমন ফরাসী রানী, কিন্তু, ইতিহাস হয়তো কাউকে ক্ষমা করতে জানে না, ঠিক সময়ে প্রতিশোধ নেয়। ঠিক সময়ে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করে, পরবর্তী প্রজন্মের কাছে পরিবেশন করে। এক ভাগে থাকে ভালো – হ্যাঁ মানুষ, ও এক ভাগে থাকে মন্দ – না মানুষ। আবার কখনো কখনো হয়তো ইতিহাসের পুনরাবৃত্তিও ঘটে।
ফরাসী বিপ্লবের উন্মত্ত ও হিংস্র রূপের জন্যে বেশীর ভাগ ফরাসীরাই রাজা লুই ও রানী মারী আন্তনিতের জন সাধারণের প্রতি তীব্র সংবেদনহীনতা, অজ্ঞানতা, উদাসীনতাকেই দায়ী করেছিল।
সময়টা যদিও অনেক বদলে গেছে, নেই সেই রাজা, নেই রানী, নেই সেই দুরাচারী শাসক ও শোষক – কিন্তু, তাদের মুখোশটা যে ওরা রেখে গেছে, কেউ কেউ সেই মুখোশ নিয়ে দিব্যি যুগের পর যুগ কাজ চালিয়ে গেছে, আর সেই মুখোশকে সাহায্য করেছে, গণতন্ত্র নামের এক শাঁখের করাত। যে করাতের জাঁতাকলে সাধারণ মানুষ – এদিকেও মরছে ও দিকেও মরছে। আর মারী আন্তনিতের আত্মা যেখানেই থাকুক, মুচকি হেসে চলেছে। আর আত্মার অবিনস্বরতা প্রমান হয়ে চলেছে, আর বলেছে – কি ঠিকই তো বলেছিলাম।