এক যাযাবর লক্ষ্যবিহীন – বড়গল্প -নয়

বড়গল্প – আট

-না। ট্রাকের দেওয়ালে ছোট্ট ছোট্ট ফুটো করা থাকে, নাকটা সেই ফুটোর সামনে নিয়ে গিয়ে ওরা নিঃশ্বাস নেয়। এরা সীমান্ত রক্ষীদের ফাকি দেওয়ার নানান ফন্দি ফিকির খুঁজতে থাকে।

যেমন, পুলিসের কাছে সীমান্তের চেক পোষ্টে মাইক্রো ওয়েভ ডিটেক্টর থাকে। রেডিয়েশন থেকে বোঝা যায় ঐ ট্রাকে কোন জ্যান্ত প্রাণী আছে কিনা।

কিন্তু, যদি ষ্টীলের ট্যাংকার হয়, তাহলে মাইক্রো ওয়েভ ডিটেক্টর ডিটেক্ট করতে পারে না। তাই, অনেক সময় সীমান্তে ঐরকম ট্যাংকারের ভেতরে মানুষ অনায়াসে পাচার হয়ে যায়। ঐ সমস্ত ট্যাংকারের ভেতরে মানুষ পাচার হতে গিয়ে দম আটকে অনেকে মারাও যায়, তখন এজেন্টরা ওদের মৃতদেহ ওখানের রাস্তার পাশে জঙ্গলের ধারে কোথাও ফেলে চলে যায়।

এই সমস্ত ব্যাপার, কুকর্ম, পাচার কাজ সবই হয় শীতের রাতের অন্ধকারে। শীতের রাত তো লম্বা, তাই ঐসব কুকর্ম করার দীর্ঘ সময় পাওয়া যায়। গরমের সময়ে ঐ সব পাচারকারীদের কাজ কর্ম একটু কমে যায়।

তবে সীমান্তের পুলিশও নিত্যনতুন পথে ওদের ধরার নানান উপায় আবিষ্কার করছে। এখন ঐসব ষ্টীলের ট্যাংকার কার্বনডাইঅক্সাইড ডিটেক্টরের মধ্য দিয়ে পার করানো হয়। জ্যান্ত প্রাণী কোন ট্যাংকারের মধ্যে থাকলে ঐ ট্যাংকারের আশেপাশে কার্বনডাইঅক্সাইডের পরিমাণ অনেক অনেক বেশী থাকে, আর আমরা সহজেই বুঝতে পারি। তবে ইউরোপে ঢোকার জন্যে ওরা কোন সীমা পর্যন্ত যেতে পারবে ভাবতেও পারবে না।’’

মানে? কোন সীমা? – শার্লট জানতে চাইল।

সেবার আমার ডিউটি ছিল কালাইসে। জানো তো – ফ্রান্সের বন্দর শহর। ওখান থেকে বড় বড় ট্রাক, গাড়ি সমস্ত ফেরী জাহাজে করে ইংল্যান্ড যায়। নৌকো থেকে শুরু করে টায়ার ইত্যাদি প্রচুর জিনিস ফ্রান্স থেকে তৈরি হয়ে ইংল্যান্ডে যায়। আমরা প্রতিটি ট্রাক এখন কার্বনডাই অক্সাইড ডিটেক্টর দিয়ে পরীক্ষা করি, তাই ঝটপট, মানে পনেরো মিনিটের মধ্যে অন্তত সাতটা ট্রাক থেকে কুড়ি জনকে বের করে আনল আমাদের দল – নানা দেশের লোক ছিল ওরা – বিশেষ করে তৃতীয় বিশ্বের গরীব দেশের মানুষ। একটা ট্রাকের কার্বনডাই অক্সাইডের পরিমাণ একটু বেশী, কিন্তু এতো বেশী নয় যে মানুষ থাকতে পারে ভেতরে। আমার একটু সন্দেহ হল, ড্রাইভারকে বললাম, ট্রাকের পেছন খুলতে। ট্রাকটি ফ্রান্স থেকে টায়ার নিয়ে যাচ্ছিল ইংল্যান্ডে। কয়েকটা টায়ার সরিয়েই যা দেখলাম, আমার তো চোখে প্রায় জলই চলে আসছিল। – দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে ফিলিপ থামল।

চলবে

About abakprithibi

I see skies of blue and clouds of white, The bright blessed day, the dark sacred night And I think to myself what a wonderful world...........
This entry was posted in Fiction, Uncategorized and tagged , . Bookmark the permalink.

মন্তব্য করুন

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  পরিবর্তন )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  পরিবর্তন )

Connecting to %s