কাঁচা থেকে শুরু করে পাকা, লেংড়া থেকে শুরু করে ফজলি, মল্লিকা, আম্রপালি, হিমসাগর – যে ধরণেরই আমই হোক না কেন, আমের মিষ্টি সতেজ সুগন্ধে, মন একছুটে ছেলেবেলার দিন গুলোয় গিয়ে উঁকি দেয়।
ঐ গন্ধটির সঙ্গে ছেলেবেলার কতো দুষ্টুমি, গরমের দিন, ছুটির দুপুর, কাল বৈশাখী ঝড়ের রাত, কতো নেই মানুষ, কতো স্মৃতি জড়িয়ে আছে – মনে পড়ে যায়, গরমের ছুটিতে মামার বাড়ীতে গিয়ে আম পাড়া হলে, মা ঝুড়ি ভর্তি আম নিয়ে বসে আম কেটে চলেছেন, যে যত পারে খাক – আর আমরা সব মামাতো ভাইবোনেরা ঘুরে ফিরে যতটা পারতাম আম খেয়ে যেতাম। তাছাড়া, গাছের কাঁচা কিংবা পাকা আম লক্ষ্য করে ঢিল ছোড়ার অতি বদ অভ্যেস তো ছিলই।
সে যাই হোক, শুনেছি অনেকেই ওজন বেড়ে যাওয়ার ভয়ে নিরীহ এই হলুদ ফলটিকে না খেয়েই গরম কাটিয়ে দেয়, কিন্তু, এখন আম খাবো কি খাবো না, সে নিয়ে একটু ভাবতে বসে, একটু খোঁজ খবর নিতে গিয়ে দেখি অযথাই আমি এই রাজ ফলটিকে দোষী করেছিলাম।
অবশ্য আম একটু তো ওজন বাড়ায়, কিন্তু, একটা রসালো আম, একটা ম্যাক বার্গার বা কে এফ সির চিকেন ফ্রাইয়ের চেয়ে শতগুণ ভালো।
যাইহোক, আমের গুনাগুণ গুলোর দিকে তাকিয়ে তো আমি অবাক – আমের এতো গুণ? সত্যি আগে জানতাম না।
আমে উপস্থিত, বিশেষ ধরণের এন্টি-অক্সিডেন্ট নাকি, বেশ কয়েক ধরনের ক্যন্সার হতে দেহকে সুরক্ষা দেয়। আম আয়রনেরও উৎস – তাই রক্তাল্পতায় আম খাওয়া চাইই চাই।
আম কলেস্টরল, উচ্চ রক্তচাপ, ও শরীরের alkali নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। তাছাড়া, ভিটামিন এ ও সি সম্বৃদ্ধ এই ফল খেলে দৃষ্টি শক্তি যেমন ভালো হয়, তেমনি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।
আমে, প্রচুর পরিমাণে glutamine এসিড আছে, যা কিনা মনোযোগ ও মেধার জন্যে খুবই দরকারি এক প্রোটিন – তাই, পড়াশোনায় মনোযোগ বাড়াতে হলেও প্রচুর আম খাওয়া চাই!
তাছাড়া, অনেক সৌন্দর্য সচেতন মেয়েরা তো আবার শুধু আম খেয়েই থেমে থাকে না, মুখে ও গায়েও মাখে – এতে নাকি ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ে, ত্বক পরিষ্কার হয়!
আমের এই একের পর এক অদ্ভুত গুণ গুলোর দিকে দেখে মনে হয় – যেই আমাদের দেশে, আমকে ‘ফলের রাজা’ বলে সম্বোধন করে, জাতীয় ফলের মর্যাদা দিয়েছিল, সে খুবই সঠিক ছিল।