শিকাগো ইউনিভার্সিটির, গথিক স্টাইলের স্থাপত্য গুলো আইভি লতায় মোড়ানো, তাই বছরের নানা সময়ে রং বদলায়, যেন জীবন্ত এক স্থাপত্য – সবুজ থেকে হলুদ, কমলা ও লাল। তাই মনে হয়, শিকাগো ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাস যেমন ছাত্র ছাত্রী, প্রোফেসর ও ভিজিটরদের আসা যাওয়ায় জীবন্ত, প্রাণবন্ত, তেমনি জীবন্ত এর গথিক ও আধুনিক স্থাপত্য।
এখানে, এই আধুনিক শহরের ইউনিভার্সিটিতে এলে দেখা যায় – স্থাপত্যের প্রাচীন আবেদন ও শিক্ষার এক অদ্ভুত স্বতঃস্ফূর্ত মায়াময় পরিবেশ – যেখানে নতুন ও পুরনো, ঐতিহ্য ও আধুনিকতা, ইতিহাস ও দূরদর্শিতা, সব এসে এক সঙ্গে মিলেছে, আর এই সেই জায়গা যেখানে প্রতিদিন নতুন নতুন স্বপ্ন, নতুন নতুন আইডিয়ার জন্ম হয়, জ্ঞান, মুক্ত চিন্তার সৃষ্টি হয়, যে জ্ঞান, আইডিয়া, চিন্তা ও স্বপ্নের উপরে একটা দেশ ও পৃথিবীর ভবিষ্যৎ নির্ভর করে – শিক্ষার সেই অদ্ভুত পরিবেশ যেন মানুষকে ছাত্র জীবনে ফিরে আসার জন্যে হাতছানি দেয়।
আর, সম্ভবত মানুষের জীবনের সবচেয়ে দামাল, চিন্তাহীন মুক্ত সময় ইউনিভার্সিটির প্রাঙ্গনেই কাটে, তাই মনে হয়, কেউ কেউ কিছুতেই ইউনিভার্সিটির মায়া কাটাতে না পেরে, নিজের ইউনিভার্সিটিতেই ফ্যাকাল্টি হিসাবে সারা জীবন সেই চির সবুজ পরিবেশে কাটিয়ে দিতে চায়।
আবার, কেউ কেউ ইউনিভার্সিটির ছাত্র জীবনকে বহু পেছনে ফেলে এলেও কখনো কখনো ইউনিভার্সিটি প্রাঙ্গনে ছাত্র ছাত্রীদের উৎসাহ, উদ্ভাবনা, জ্ঞানের অংশীদার হতে ভালোবাসে – আর সেই জন্যেই বোধহয় শিকাগো ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাস, যেখানে আমেরিকা সহ সমগ্র পৃথিবীর নব প্রজন্ম পৃথিবীকে বদলে দেওয়ার স্বপ্ন দেখে – সেই শিকাগো বিশ্ব বিদ্যালয়কে দেখতে, অদ্ভুত সুন্দর উদার শিক্ষার মোহময়ী পরিবেশ অনুভব করতে, অনেকেই এই ইউনিভার্সিটি প্রাঙ্গনে আসে।
গাছ দিয়ে সাজানো বোটানিক্যাল গার্ডেনের পথ ধরে হেঁটে যেতে যেতে, কিংবা ইউনিভার্সিটির ছাত্র ছাত্রীদের গুঞ্জনে ভরপুর ক্যাফেতে বসে কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে, জ্ঞান বিতরনের সেই বিশাল যজ্ঞে সামিল হতে হতে – মন হয়তো বা ছাত্র জীবনকে ফিরে পেতে চায়, বিশেষ করে, ছাত্র জীবনের সেই দামাল মুক্ত দিনে ফিরে যেতে চায়। কিন্তু, বর্তমান জীবনের চলমানতা, চাহিদা, আশা যে আরও আরও বিস্তারিত, প্রসারিত – তা কে না জানে।