ভিয়েনা শহরের দক্ষিণে Karlsplatz এর স্কোয়ারের একদিকে, ভিয়েনার অন্যতম টুরিস্ট আকর্ষণ Karlskirche বা St. Charles’s Church এর আশ্চর্য স্থাপত্যকে এক কথায় ‘অপূর্ব’ ‘ম্যাগ্নিফিসেন্ট’ ‘সুন্দর’ বলেই কি টুরিস্টরা থেমে যায়! মনে হয় না – হয়তো এই চার্চের সৌন্দর্য বিবরণের জন্যে অভিধানে আরও আরও বিশেষণ খোঁজে।
জুলাইয়ের মেঘলা বিকেলের শেষে, বারোক স্টাইলে তৈরি আঠারো শতাব্দীর এই চার্চটির সামনে পৌঁছে আমরা তো রীতিমত আশ্চর্যই হয়েছিলাম – একদম আলাদা দেখতে!
অষ্ট্রিয়ার আর্কিটেক্ট Johann Bernhard Fischer von Erlach তার রোম ভ্রমণ থেকে, এই চার্চ ডিজাইনের প্রেরণা পেয়েছিলেন, প্রধান চার্চের পাশে দুই বিজয় তোরণও রোমের Column of Trajan এর অনুকরণে তৈরি – কিন্তু তবুও যেন ভিয়েনার পরিবেশে এই চার্চ ইউরোপের অন্যান্য চার্চ থেকে সম্পূর্ণ আলাদা বলেই মনে হয়।
ভিয়েনার অন্যান্য স্থাপত্যগুলো থেকে সম্পূর্ণ আলাদা এই চার্চটির গঠনশৈলীর আশ্চর্য সৌন্দর্যে, প্রথম দর্শনেই টুরিস্টরা অভিভূত হয়ে যায়। শেষ বিকেলের মেঘলা ধূসরতাও কিন্তু এই চার্চের সৌন্দর্যে বিন্দুমাত্র আঁচড় কাটে নি। বরং সামনের পুকুর ও চার্চের যুগলবন্দীতে এক অপূর্ব দৃশ্য তৈরি হয়েছে।
সামনে সাজানো ফুলের বাগান, পুকুর, পুকুরের পাশে অত্যাধুনিক এক ভাস্কর্য – সব দেখে মনে হয়, ঐতিহাসিক নিদর্শন, স্থাপত্য, জাতীয় সম্পত্তি মানুষের পরিচর্যায়, রক্ষণাবেক্ষণে আরও আরও সুন্দর হয়ে ওঠে। আর ইউরোপের মানুষ জানে কি ভাবে তাদের নিজস্ব জিনিসের যত্ন নিতে হয়, আগলে রাখতে হয়, যথাযোগ্য সম্মান দিতে হয়। আর ইউরোপে তো বহু টুরিস্ট অতীতের এই সমস্ত আশ্চর্য সৃষ্টির খোঁজে, প্রেরণার খোঁজে আসে, দেখতে আসে। আমাদেরও নির্জন ভিয়েনা বিকেলটি ভিয়েনার বারোক চার্চের পাশে বসে কেটে যায় – আর আশ্চর্য সেই মুহূর্তটি ছবি হয়ে রয়ে যায়।