কোন কোন দিন সকালে ঘুম থেকে উঠেই মনে হয় ‘কণ্ঠ আমার রুদ্ধ আজিকে, বাঁশি সঙ্গীতহারা’। জীবনের সমস্ত না পাওয়ারা ভিড় করে দাঁড়ায়, দিনের প্রথম চা বিস্বাদ লাগে – নিজের সত্তা যেন টুকরো টুকরো হয়ে যায়, চিন্তাধারা এলোমেলো হয়ে যায়। দিনের সমস্ত ছন্দটি কেটে যায়। কোকিলও যেন কুহু ডাকে বলে যায় – তুমি আজ দুখী। আর সেই অচেনা দুঃখ দলা পাকিয়ে গলার কাছে আটকে থাকে – অথচ সত্যি কি দুঃখ কে নিয়ে বেশী ঘাটাঘাটি করা উচিত, তার সমস্ত আবদার মেনে নেওয়া উচিত, নিজেকে দুঃখের কাছে সঁপে দেওয়া উচিত? মনে হয় না – আছে দুঃখ, আছে মৃত্যু, বিরহ দহন লাগে, তবুও শান্তি তবুও আনন্দ, তবুও অনন্ত জাগে।
জীবন যখন চলে দুঃখরা সাথে চলে, কিন্তু, যে কোন দুঃখই সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ছোট হতে থাকে। তাছাড়া, দুঃখ ও দুশ্চিন্তাকে অতিক্রম করাই তো জীবনের লক্ষ্য। যখন না পাওয়ারা ভিড় করে দাঁড়ায়, কি পেলাম সেই দিকে কড়া নজর দিতে হয় – তারপর দেখা যায়, একে একে না পাওয়ারা কেমন করে যেন সরে সরে দাঁড়িয়েছে, জীবন এগিয়ে গেছে।
আসলে জীবন জিনিসটা খুবই ডায়নামিক এক প্রসেস – যেখানে প্রতিদিন, প্রতি মুহূর্তে আবহাওয়া পরিবর্তন হয়ে চলেছে। আর সর্বদাই আমরা কি পেলাম ও কি পেলাম না সেই হিসাব লেখা হয়ে চলেছে। আর হিসাব যাই লেখা হোক না কেন সর্বদাই আলোর দিকে, সামনেই চলতে হয়, পথ হাঁটতে হয়। পজিটিভ মনোভাব নিয়ে এগিয়ে যেতে হয় – না হলে যে, জীবনের দুঃখের সেই নুড়ি পাথর গুলো পর্বত আকার ধারণ করে, আর সেই দুঃখের ভারে জীবন ন্যুব্জ হয়ে পড়ে।
তাছাড়া, দুঃখ যতই বড় হোক না কেন, মানুষ সেই দুঃখ ও দুশ্চিন্তার বোঝা সূর্যাস্ত পর্যন্ত বয়ে নিয়ে যেতে পারে, তাই, দুশ্চিন্তা ও দুঃখকে এড়িয়ে যাওয়ার একমাত্র উপায় – সমস্ত আগ্রহ ক্ষমতা দিয়ে আজকের কাজ করে যাওয়া। যাই হোক না কেন, এগিয়ে যাওয়াই জীবনের মূল মন্ত্র – শো মাস্ট গো অন।