মেঘলা দুপুরে পুরনো আপার জাগ্রেবের সেন্ট মার্ক স্কোয়ার ও তাকে ঘিরে আশপাশের স্থানীয় বিল্ডিঙের গায়ে যদিও এক ধূসর ভাব, এক নিঃস্ব নিঝুম নির্জনতা জড়ানো, কিন্তু, St. Mark’s Square এর মধ্যমণি St. Mark’s চার্চের ঝকঝকে উজ্জ্বল রঙিন টাইলসের ছাদ জায়গাটাকে যেন আলো করে রেখেছে।
তেরো শতাব্দীর তৈরি এই চার্চের ছাদে নানা রঙে রঙিন টাইলস দিয়ে তৈরি নক্সা ও জাগ্রেব তথা ডালমেশিয়া, ক্রোয়েশিয়ার coat of arms সবই অতি সহজেই নজর কেড়ে নেয় – তাই শহরের এই স্কোয়ার ও এই আকর্ষণীয় সেন্ট মার্ক চার্চ জাগ্রেবের টুরিস্ট আকর্ষণ গুলোর মধ্যে অন্যতম।
যদিও এই চার্চটি তৈরি হয়েছিল তেরো শতাব্দীতে, কিন্তু, জাগ্রেবের বুকে কয়েকশো বছর ধরে নানান প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও রাজনৈতিক পালা বদলের সঙ্গে সঙ্গে এই চার্চেরও বহুবার নতুন ভাবে সংস্কার হয়েছে – উনিশ শতাব্দীতেই নিও গথিক স্টাইলে নতুন ভাবে তৈরি হয়েছে চার্চের বহু অংশ এবং চার্চের ভেতরের বহু অংশ বিংশ শতাব্দীতেই সংরক্ষণ করা হয়েছে। তাই, আসল সেই পুরনো গথিক স্টাইলে তৈরি চার্চের খুবই কম অংশই রক্ষা পেয়েছে।
প্রাচীন গথিক নিদর্শন, যা যা নবীন সংস্কার হতে রক্ষা পেয়েছে, তার মধ্যে চার্চে ঢোকার দক্ষিণের সদর দরজার ঠিক উপরে চোদ্দ শতাব্দীর তৈরি কিছু আসল গথিক ভাস্কর্য উল্লেখযোগ্য – ঐতিহাসিকতার দিক দিয়ে যাদের মূল্য ঐতিহাসিকদের কাছে অপরিসীম।
অতীতে এই স্কোয়ার নাকি খুবই জম জমাট ছিল – অনেকটা জাগ্রেবের প্রাণকেন্দ্রই বলা হোতো, এখানে সপ্তাহের দোকান -বাজার বসতো, স্থানীয় মানুষের দৈনন্দিন জীবন যাপনের কোলাহলে পরিপূর্ণ ছিল এই স্কোয়ারের পরিবেশ।
কিন্তু, এখন শহর ও শহরে মানুষ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই স্কোয়ার জাগ্রেব বাসীর কাছে আকারে ছোট হয়ে গেছে – তাই এই স্কোয়ার এখন শহরের মাঝেই নির্জন ধ্যান মগ্ন হয়ে থাকে, শুধু টুরিস্টরা মাঝে মাঝে হানা দিয়ে এর নির্জনতা ভঙ্গ করে, আর সবাই ফিরে গেলে আবার সেন্ট মার্ক স্কোয়ারে ফিরে আসে উদাসীন রিক্ত নির্জনতা।