কেমন এক রুক্ষ, বুনো, প্রাগৈতিহাসিক ভাব এই পাথুরে পাহাড়ি বাগানের চরিত্রে। জংলি ক্যাকটাস শখের বাগানে স্থান পেলেও নিজেদের বন্য অস্তিত্ব যেন হারায় নি। যেদিকে ইচ্ছা যেমন খুশী বেড়ে ওঠার স্বাধীনতাটুকু বিন্দুমাত্র হারায় নি এই বাগানের ক্যাকটাসরা।
প্রায় আশি বছর ধরে পৃথিবীর নানা দিক থেকে হাজার প্রজাতির ক্যাকটাস জাতীয় গাছের সংগ্রহে ভরে উঠেছে মোনাকোর এই অদ্ভুত বাগান। মেডিটেরিয়ান সমুদ্রের বুকে যেখানে পাহাড় খাড়া ভাবে নেমে গেছে সেখানেই এই অদ্ভুত ক্যাকটাস বাগান। পাথুরে পাহাড়ের গায়ে গায়ে গড়ে উঠেছে এই অদ্ভুত গাছের সংগ্রহশালা। এই বাগানের উচ্চতায় এসে মেডিটেরিয়ানের গায়ে মোনাকো দেশটির বিস্তার দেখা যায়, দেখা যায় দিগন্তে মেশা সমুদ্র।
বছরের নানা সময়ে এই ক্যাকটাসদের ফুল ফোটার সময় হয়, তাই যখনই টুরিস্ট এই বাগানে পা রাখে কোন না কোন অদ্ভুত আকারের ফুলের দেখা পায়। কোন কোন আশ্চর্য ফুলের রঙে যেন চোখ ধাঁধায় টুরিস্টদের। দৈত্যাকার ক্যাকটাস থেকে শুরু করে বোতাম আকারের ক্যাকটাসে এই বাগানের দৃশ্য পট সাজানো।
যতটা সম্ভব প্রাকৃতিক উপায়েই এই বাগানের রক্ষণাবেক্ষণ করে এখানের লোকেরা। কোন কোন জায়গায় পাথরের রেলিং দিয়ে তৈরি ভিউ পয়েন্ট চোখ জুড়িয়ে দেয়। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে দুপুর রোদে বেশ এক মিষ্টি উষ্ণ পরশ। আবার পাহাড়ি পাথুরে পথে আলো ছায়া তৈরি করেছে বড় ক্যাকটাসের দল। পাহাড়ের গায়ে পাথুরে আঁকাবাঁকা রাস্তা দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে নানান ক্যাকটাস দেখতে প্রচুর মানুষ ভিড় করে এই বাগানে।
ফেব্রুয়ারির মিঠে রোদ পিঠে হেঁটে যাই ক্যাকটাস সাজানো বাগান পথে। নানা দেশ, বিদেশ, এশিয়া, মেক্সিকো থেকে বহু ক্যাকটাস এখানে এসে দিব্যি মেডিটেরিয়ান আবহাওয়া মানিয়ে নিয়েছে, বেড়ে উঠেছে, ফুল ফুটিয়েছে। দেখতে দেখতে সময় গড়ায়।