স্বারস্কির দুনিয়ায় (Swarovski kristallwelten, Austria)

এখানে উজ্জ্বল চকচকে পাথরের ছটায় চোখ ধাঁধায়, আশ্চর্য হতে হয়। উজ্জ্বল পাথরের প্রতি মানুষের আকর্ষণ বহুকালের পুরনো, হিরের আলোর বিচ্ছুরণে মানব জাতি সম্মোহিত হয়েছে যুগে যুগে। হিরে নিয়ে রাজা মহারাজাদের যুদ্ধ বিগ্রহের কথা তো ইতিহাসের পাতায় পাতায়। সেই দামী পাথর তো আর সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে নেই, তাই ক্রিস্টেল দিয়েই সাধ মিটে যায়। আর যদি সেই ক্রিস্টেল Swarovski Crystal হয় তাহলে তো তার রূপের ছটায়, আলোর বিচ্ছুরণে, আলোর জাদুতে চোখ ফেরানোই দায়। তাই যখন অস্ট্রিয়ার Wattens এর Swarovski  Crystal এর আজব দুনিয়া দেখার কথা উঠল, এক কথায় টিকিট কেটে নিলাম।

বিগত একশো বছর ধরে Swarovski পরিবার সারা দুনিয়াকে দেখিয়েছে কি ভাবে সামান্য কাঁচ ক্রিস্টেল থেকেই তৈরি হতে পারে অপূর্ব গহনা, মুগ্ধ করতে পারে পৃথিবীর ক্রিস্টেল প্রেমীদের। মধ্য ইউরোপের স্ট্যাইল, ফ্যাশন ও সংস্কৃতির সঙ্গে যেন Swarovski ক্রিস্টেল গত একশো কুড়ি বছর ধরে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে আছে। মধ্য ইউরোপ Swarovski মুগ্ধতায় ডুবে আছে। আর সেই মুগ্ধতার পথে কয়েক ধাপ এগিয়ে গিয়েই তৈরি হয়েছে Swarovski পরিবারের এই মিউজিয়াম তথা ওয়ান্ডার ওয়ার্ল্ড।

Swarovski Crystal এর একশো বছর পূর্তি উপলক্ষে অস্ট্রিয়ার মাল্টি মিডিয়া আর্টিস্ট Andre Heller এর মগজ জাত Swarovski  র এই আশ্চর্য দুনিয়া। তৈরি হয়েছিল ১৯৯৫ এ। এখানে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ক্রিস্টেলের দেখা পাওয়া যায়।

মিউনিখ থেকে বেভেরিয়ার সুন্দর প্রকৃতি দেখতে দেখতে পাহাড়ি রাস্তা ধরে দুপুরের দিকেই পৌঁছে গেলাম Swarovski র ক্রিস্টেল দুনিয়ায়। এখানে ঢোকার দরজাটি এক দৈত্যের মুখ। ঘাসের তৈরি দৈত্যের মুখ দিয়ে ক্রমাগত জল পড়ছে, উজ্জ্বল চোখ দুটো আবার ক্রিস্টেলের তৈরি। এখানে ক্রিস্টেলের তৈরি চোদ্দটা Chambers of Wonder দর্শকদের অবাক করে দেওয়ার জন্যে সর্বদা তৈরি।

এখানে ঢোকার পর থেকেই একের পর এক চেম্বার ও হাজার হাজার ক্রিস্টেল দিয়ে তৈরি নানান গহনা, মূর্তি, অবয়ব, পোশাকের প্রদর্শনীর সঙ্গে সঙ্গে মেকানিক্যাল থিয়েটার, উইন্টার ওয়ার্ল্ড, উইন্টার ড্রিম সবই দর্শকদের আশ্চর্য করতে বাধ্য।

এখানে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় kaleidoscope এ ঢুকে নিজের হাজার প্রতিচ্ছবি দেখা যায়। বিশাল এই Crystal dome এ পা রাখা মাত্র হাজার কাঁচের উপরের প্রতিচ্ছবি সবাইকেই চমক লাগায়, নিজেকে হাজার ভাগে ভাগ হতে দেখতে সবারই ভালো লাগে হয়তো। এখানে এসে সবাই যেন শিশুর মতোই অবাক চোখে চেয়ে দেখে।

আমার মনে হয়, সামান্য কাঁচ শুধু মাত্র পরিবেশনের গুনে, কল্পনার ছোঁয়ায়, শৈল্পিক চেতনায় কেমন মহার্ঘ্য হতে পারে তারই নমুনা এই ক্রিস্টেল ওয়ার্ল্ড। সাধারণকে অসাধারণ করে তোলার এই নমুনা দেখে শুধু যে মুগ্ধ হলাম তা নয়, রীতিমত ভাবিত হয়ে গেলাম।

      

About abakprithibi

I see skies of blue and clouds of white, The bright blessed day, the dark sacred night And I think to myself what a wonderful world...........
This entry was posted in Austria, Europe, Travel and tagged , , , , , . Bookmark the permalink.

মন্তব্য করুন

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  পরিবর্তন )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  পরিবর্তন )

Connecting to %s