মাঝে মাঝে মনে হয় জীবনের সময় গুলো যেন এক্কাগাড়ি – খুব ছুটেছে। ছুটতে ছুটতে চলেছে সে বহু পথ, তারপর সেই ফেলে আসা পথের দিকে তাকিয়ে সে অবাক বিস্ময়ে ভাবতে বসে – এতোটা পথ কখন পার হয়ে এলাম?

তুলুসের সেন্ট অগস্তিন মিউজিয়াম, এখানে যেন আজও সুদূর অতীত সময়ের গন্ধ লেপ্টে থাকে।
সময়ের আবার কোন গন্ধ হয় নাকি – আমার তো মনে হয়, হয় – সময়ের এক অদ্ভুত গন্ধ হয়।
কখনো কখনো কোন এক গন্ধ আমাকে জীবনের এক এক একটা ফেলে আসা সময়ের সামনে এনে দাঁড় করায়। চৈত্রের শুকনো মাটির বুকে প্রথম বৃষ্টি পড়ার সেই গন্ধে আজও যেন আমি কিশোর বেলার সেই দামাল দিন গুলোয় ফিরে যেতে পারি।
যাইহোক, হচ্ছিল সেন্ট অগস্তিন মিউজিয়ামের কথা। অতীত সময়ের সমস্ত মানুষের জীবন যাপনের, অস্ত্বিতের, মেধার গল্প বুকে নিয়ে মিউজিয়াম বর্তমানে নিজের অস্তিত্ব বজায় রেখে চলে।
প্রাচীন সেই মিউজিয়ামের লম্বা টানা বারান্দায় হেমন্তের তেড়ছা হলুদ রোদ যখন প্রাচিন সেই থাম গুলোর ছায়া ফেলে – অতীত তখন সময়ের ছবি আঁকে, বর্তমানকে ছুঁতে ছুঁতে অনন্তের পথে যাত্রা করে – সময়।
সেই মন কেমন করা হলুদ আলো তখন মনকে আরও আরও গভীর নস্টালজিয়া আক্রান্ত করে তোলে। আর সেই আলো ছায়ার পথ ধরে হেঁটে গেলে অতীতের কোন এক সময় বিন্দু যেন আমাকে ছুঁয়ে প্রশ্ন করে – কি সেদিনও কি তুমি ছিলে এই পথে? এমনি একটি মুহূর্তে তুমি কি ছিলে? পৃথিবীর বুকে মানুষের যাওয়া আসার অদ্ভুত খেলার আমি যে নীরব সাক্ষী – তোমাকে যেন সেদিনও দেখেছিলাম – অন্য বেশে! অন্য রূপে! ছিলে কি সে দিন? আবার কি এসেছো ফিরে???
মানুষ কি ফিরে ফিরে আসে ?? এই প্রশ্নটা আজকাল মাঝে মাঝেই মনে হয় – আর যদি ফিরেও আসে, সে কোন জন্মের স্মৃতি নিয়ে ফেরে? আর যারা চলে যায় ? তারা তার জীবনের কোন সময়ের স্মৃতি নিয়ে যায়। মাঝে মাঝে মনে হয় – জীবন ও প্রতি মুহূর্তে ঘটে চলা জীবনের ঘটনাবলী অনেকটা ঠিক আলোর মতো – দেখে মনে হয় একই ভাবে চলছে, কিন্তু আসলে আলো কনিকার সমন্বয়, জীবনও তাই।এক একটা মুহূর্তের ছবিই তখন সমগ্র জীবন হয়ে ওঠে।