অষ্ট্রিয়ার ইন্সব্রুক শহরের প্রধান কেন্দ্রে যে রাস্তাটি চলে গেছে নাম তার Maria-Theresien Strasse– আর সেই রাস্তাটির প্রেক্ষাপটে আছে আল্পসের পাহাড় শ্রেণী – যার শিরা উপশিরায় সামারের শুরুতেও শীতের তুষার এখনও আটকে আছে – শীত চলে যেতে যেতে তার চিহ্ন ছেড়ে যেতে ভোলে না।
হয়তো, ঐ পাহাড় শ্রেণীর গায়ে আটকে থাকা তুষার সম্পূর্ণ গলে যাওয়ার আগেই আল্পসের গায়ে শীত নেমে আসবে – আবার ঐ পাহাড় শ্রেণীর প্রেক্ষাপট তুষারে ঢেকে যাবে। কিন্তু, যখনই এই শহরকে দেখা যায়, এই রাস্তাকে দেখা যায় – শুনেছি এর সৌন্দর্যের কোন তুলনা হয় না। মানুষ এই রাস্তার প্রেমে পড়তে বাধ্য হয়। এখানের মানুষ শীতে এক রকমের সৌন্দর্যে মোহিত, সামারে অন্যরকম সৌন্দর্যের মোহে মোহিত – এখানে প্রকৃতি কখনই মানুষকে নিরাশ করে না।
বছরের প্রায় সব সময়েই এই রাস্তা দেশ বিদেশের টুরিস্টের ভিড়ে ভরপুর জমজমাট থাকে। আর সামারে তো কথাই নেই – এই রাস্তায় টুরিস্টদের ভিড় আরও বেড়ে যায়।
এখানে, শুধু যে আল্পসের প্রকৃতিই তার যাবতীয় সৌন্দর্যের পসরা সাজায় তা নয়। এই রাস্তার দুই পাশের বারোক স্টাইলের ঐতিহাসিক স্থাপত্য ও মনুমেন্ট তার ঐতিহাসিকতা নিয়ে রহস্য তৈরি করে, গল্প সাজায় – এবং বর্তমান জীবনের হাতছানি দেয়।
সেই ঐতিহাসিক স্থাপত্যের নিদর্শনকে পাশে রেখে হাঁটতে হাঁটতে এই শহরকে দেখে নিতে নিতে এই রাস্তা ধরে সিধে হেঁটে যেতে হয়। তারপর এই রাস্তা পৌঁছে দেয় এই শহরের আরেক বিখ্যাত স্কোয়ারে – যেখানে আছে সোনালি ছাদ দেওয়া বেলকনি – ইন্সব্রুকের ওল্ড সিটি সেন্টার।
প্রায় সাতশো বছর আগে যখন এই রাস্তা তৈরি হয়েছিল, ইন্সব্রুকের ওল্ড সিটি সেন্টারের সিটি ওয়ালের ভেতরেই ছিল এই শহরের প্রধান কেন্দ্র। এই এই রাস্তার দুই পাশে ছিল মাত্র কয়েকটা ফার্ম হাউস। এই রাস্তা ও তার দুই পাশ সেই সময়ের পুরনো ইন্সব্রুক শহরের মধ্যে পড়ত না – এই জায়গাকে নতুন শহরের মধ্যে গণ্য করা হত। কিন্তু, তার পরে কয়েকশো বছর ধরে ধীরে ধীরে এই রাস্তাকে কেন্দ্র করে ইন্সব্রুক শহর গড়ে উঠেছিল – যা বর্তমানে দেখা যায়। শপিং সেন্টার, ক্যাফে, রেস্টুরেন্ট, সুভেনির শপ নিয়ে যে শহর কেন্দ্র ও তার প্রধান রাস্তা বর্তমান জীবনের চাহিদায় পরিপূর্ণ।
সামারের শুরুতে, ইস্টারের ছুটির দুপুরে এখানের পরিবেশে ছুটির ফুরফুরে, হালকা এক খোশমেজাজ জুড়ে থাকে। এই রাস্তা ধরে হালকা চালে মানুষের চলার ছন্দেই সেই খোশমেজাজ ধরা পড়ে। যেন এখানে এক নিশ্চিন্ত ছুটির ফাঁদ পাতা আছে। এখানে এসে সেই ফাঁদে বাঁধা পড়তেই হয়। শুধু হাঁটা ও দেখার আনন্দেই এই রাস্তা ধরে হেঁটে যাওয়া যায়।
Please subscribe My YouTube link :- https://www.youtube.com/channel/UCF90je3d5_QeBFKYnEjHZyA