হাঁটা নিয়ে কিছু কথা (Walking )

“Walking is the best possible exercise. Habituate yourself to walk very far.” – Thomas Jefferson
Walking

গত কয়েক শতাব্দী ধরে ধূম্রপানকে স্বাস্থ্যের জন্যে সবচেয়ে ক্ষতিকারক এবং অনেক রোগের উৎস বলে মনে করা হত। কিন্তু, নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে – সিগারেটের ধোঁয়া আমাদের যত না ক্ষতি করে তার চেয়েও বেশী ক্ষতি করে ‘বসে থাকা’ বা Sedentary lifestyle । অবশ্য বর্তমানে আমাদের কাজ মানেই তো বসে থাকার কাজ।

গাড়িতে বসে কর্মক্ষেত্র, কর্মক্ষেত্রে গিয়ে বসে থাকা, ঘরে ফেরা – আমাদের জীবন যাপন মানেই তো এক ‘বসে থাকা’ থেকে আরেক ‘বসে থাকা’য় পৌঁছনো, আবার আরেক ‘বসে থাকা’য় ফেরা। এ এক বিষাক্ত চক্র।

নাঃ, আমাদের আজকাল আর জঙ্গলের মধ্যে মাইলের পর মাইল হেঁটে শিকারে যেতে হয় না – সুপার মার্কেট আছে, অনলাইন মার্কেট আছে – সবই হাতের কাছে পাওয়া যায় – হাঁটার কি দরকার, জীবন অনেক সহজ ভাবেই তো চলছে। এমনকি টিভি দেখতে বসেও চ্যানেল বদলানোর জন্যে উঠতে হয় না – রিমোট আছে। সিঁড়ি ভাঙতে হয় না – লিফট আছে। বর্তমান শতাব্দীর বিজ্ঞান যেন, আমাদের হাঁটা, চলাফেরা বন্ধ করার জন্যে প্রতিনিয়ত ষড়যন্ত্র করে চলেছে।

মানুষের ইতিহাসের দিকে চোখ রাখলে দেখা যায়, এক একটি শতাব্দীতে মানুষকে এক একটি রোগ – যেমন প্লেগ, কলেরা ইত্যাদি সংক্রামক রোগ মানুষকে দুর্বল করার চেষ্টা করেছে – কিন্তু মানুষ সব কিছুকে জয় করে একবিংশ শতাব্দীতে পৌঁছেছে। বিজ্ঞানের চমৎকারিতা দেখেছে – অটোমেশন দেখেছে।

কিন্তু, বর্তমানে দেখা যাচ্ছে, Sedentary lifestyle  মানুষকে আরও বড় এক পরীক্ষার সামনে এনে দাঁড় করিয়েছে। বিশেষ করে উন্নত ও উন্নতিশীল দেশের মানুষের জীবন যাপনে এই লাইফ-স্টাইল বেশী লক্ষ্য করা যায়। আর এই সিডেন্টারি লাইফস্টাইল আধুনিক জীবন যাপনে কি কি ছাপ ছাড়ছে তার দিকে একবার চোখ রাখি – উচ্চ রক্তচাপ, টাইপ টু ডাইবেটিস, অষ্টিও-পরোসিস, লিপিড-ডিসওর্ডার, অবসাদ, দুশ্চিন্তা …- লিস্টটি ক্রমাগত বাড়তেই থাকে।

তা’হলে উপায় কি? এই সিডেন্টারি লাইফস্টাইলের বিষাক্ত চক্র থেকে বেরোনোর উপায় কি?

স্বাস্থ্য বিজ্ঞানীদের মতে – উপায় একটাই আছে – হাঁটা কিংবা ফিজিক্যাল এক্টিভিটি। জোরকদমে কিংবা ধীরকদমে হাঁটা। প্রতিদিন সকালে নিয়ম করে ত্রিশ মিনিট যদি হাঁটা যায়, ঐ সিডেন্টারি লাইফস্টাইলের বিষাক্ত চক্র থেকে বেরিয়ে আসা যেতে পারে।

আসলে,  যে কোন ভালো অভ্যাস তৈরি করতে একটু সময় লাগে। গবেষণায় দেখা গেছে, কেউ যদি টানা একুশ দিন কোন এক জিনিস নিয়ম করে, করে যায় – সেটা তার অভ্যাসে পরিণত হতে পারে। তাই, প্রতি সকালে হাঁটার অভ্যাস তৈরি করার জন্যে, প্রথম একুশ দিন একটু কষ্ট করে যেতে হবে।

আর তাছাড়া, আহ্‌ – কতদিন সূর্যদোয় দেখিনি। ভোরের হাওয়া মেখে কমলা সূর্যদোয় দেখতে পাওয়ার আশায় হয়তো আমিও প্রতিদিন সকালে হাঁটার অভ্যাস তৈরি করার চেষ্টা করব – অন্তত একুশ দিন তো চেষ্টা করবই। দেখি অভ্যাসে পরিণত করতে পারি কিনা।

অজানা's avatar

About abakprithibi

I see skies of blue and clouds of white, The bright blessed day, the dark sacred night And I think to myself what a wonderful world...........
This entry was posted in Uncategorized and tagged , , , . Bookmark the permalink.

1 Response to হাঁটা নিয়ে কিছু কথা (Walking )

  1. অজানা's avatar অজ্ঞাত বলেছেন:

    Walking is the best exercise- I read up this write up. Very good writing. I try to walk as much as possible at Kolkata

অজ্ঞাত এর জন্য একটি উত্তর রাখুন জবাব বাতিল