শিকাগো শহরের Grant Park এর একদম কেন্দ্রে যে বিশাল এক ফোয়ারা দেখা যায় – নাম তার Buckingham Fountain আসল নাম অবশ্য Clarence Buckingham Memorial Fountain। শিকাগো শহরের সদর দ্বার হিসাবে এই ফোয়ারাটি বিখ্যাত এক ল্যান্ডমার্ক।
হয়তো, শিকাগোর মত বড় শহরের লক্ষ মানুষের নানান ইতিহাসের ভিড়ে, বিজনেস ম্যান Clarence Buckingham এর নাম আরও পাঁচ জন বড় ব্যবসায়িকদের ভিড়ে হারিয়েই যেত, হয়তো, আজও শিকাগোর মানুষ ওকে মনে রাখে নি।
কিন্তু, শিকাগো শহর Clarence Buckingham কে ধরে রেখেছে, মনে রেখেছে। Clarence Buckingham শিকাগো শহরের এক বড় বিজনেস ম্যান এবং জাপানিজ আর্ট কালেক্টর ছিলেন।
তাঁর স্মৃতির উদ্দেশ্যে, তার বোন Kate Buckingham শিকাগো শহরকে এই ফোয়ারাটি উপহার দিয়েছিলেন। শিকাগোর এই ফোয়ারা আজ পৃথিবীর অন্যতম বড় ও বিখ্যাত ফোয়ারা গুলোর মধ্যে অন্যতম।
ফোয়ারাটিকে ঘিরে চারটে সমুদ্র ঘোড়া দেখা যায়। আসলে, ফোয়ারাটি লেক মিশিগানের প্রতীক ও চারদিকের চারটে সমুদ্র ঘোড়া, আমেরিকার চারটে স্টেটের প্রতীক।
শিকাগোর এই ল্যান্ডমার্ক ফোয়ারাটির প্রেরণা ছিল – ফ্রান্সের ভার্সেই প্যালেস গার্ডেনের Latona Fountain ।
Kate Buckingham , শিকাগোর গগনচুম্বী অট্টালিকার আধুনিক ল্যান্ডস্কেপে, মধ্যযুগীয় ইউরোপের রূপকথা ও রোমান্টিকতার ছোঁয়া দিতে চেয়েছিলেন।
আর কে না জানে, ইউরোপের যাবতীয় রোমান্টিকতা ও ফ্যান্টাসির জন্মভূমি ফ্রান্স। আর সেই ইউরোপিয়ান রোম্যান্টিকতার চলমান রূপ – ফোয়ারা ও তাকে ঘিরে নানান ভাস্কর্য। তিনি চেয়েছিলেন – সন্ধ্যায় যখন এই ফোয়ারা নানা রঙের আলোয় সেজে উঠবে – যেন এক রহস্যময় রোম্যান্টিক রূপকথার জন্ম হয়।
Latona Fountain এর অনুকরণে ধাপে ধাপে ওয়েদিং কেক স্টাইলে তৈরি শিকাগোর এই ফোয়ারা। কিন্তু, আকারে অনেকটাই বড় ও অন্যরকম। প্রেক্ষাপটে শিকাগো শহরের কংক্রিটের গগনচুম্বী আকাশরেখার মধ্যে এই ফোয়ারার অবস্থান যদিও একটু বেমানান – শিকাগোবাসীদের প্রিয় এই ফোয়ারাকে দেখতে প্রচুর মানুষ এই পার্কে আসে।
এপ্রিল থেকে অক্টোবর – প্রতি সন্ধ্যায়, জিবন্ত এই ফোয়ারা সুর লহরীর সঙ্গে আলোয় আলোয় সেজে ওঠে । আর, ক্রিসমাসের সময়ে উৎসবের আলোয় সাজে।