মাদ্রিদ শহরের বড় রাজপথ – Gran Vía ধরে হাঁটতে শুরু করলে, ঐ রাজপথ যে বড় এক স্কোয়ারে নিয়ে আসে – Plaza de España , এখানেই মাদ্রিদের ব্যস্ত রাজপথটি এসে থমকে যায়, বিশ্রাম নিতে চায়। শহরের কেন্দ্রে এই স্কোয়ারকে, মাদ্রিদ শহরের হৃদস্পন্দনও বলা যায়।
এই স্কোয়ারের মধ্যমণি এক বিশাল মনুমেন্ট ও ফোয়ার। স্প্যানিশ সাহিত্যের স্বর্ণযুগের বিখ্যাত ব্যক্ত্বিত্ব, ঔপন্যাসিক, কবি, নাট্যকার ও লেখক Miguel de Cervantes Saavedra এর স্মৃতিতে নিবেদিত এই মনুমেন্ট ও স্কোয়ার।
তাই, মাদ্রিদকে দেখতে গিয়ে প্রচুর টুরিস্টের গন্ত্যব্য তালিকায় এই স্কোয়ারের নাম প্রথমেই আসে। Cervantes শুধু যে স্প্যানিশ সাহিত্যকেই সমৃদ্ধ করেছিলেন তা নয়। তার লেখা Don Quixote বিশ্ব সাহিত্যকেও সমৃদ্ধ করেছে। Don Quixote কে প্রথম আধুনিক উপন্যাস বলা হয়। এবং আজও Don Quixote উপন্যাসকে সবচেয়ে ভালো ক্লাসিক সাহিত্য হিসাবে গণ্য করা হয়।
এই মনুমেন্টের একদম কেন্দ্রে Cervantes এর শ্বেত পাথরের মূর্তি। তাছাড়া, এই মনুমেন্টকে ঘিরে যে ব্রোঞ্জের তৈরি ভাস্কর্য গুলো দেখা যায়, তা Cervantes এর সৃষ্টি, কল্পনা। ঐ ভাস্কর্য গুলো Don Quixote উপন্যাস থেকে উঠে আসা কাল্পনিক চরিত্রের বাস্তব রূপ। আর এক দিকে দেখা যায় Cervantes আরেক প্রিয় চরিত্র, রানী Dulcinea del Toboso এর ভাস্কর্য। এখানে Cervantes এর কল্পনারা বাস্তব রূপ পেয়ে, একবিংশ শতাব্দীর মানুষের সামনে এসে উপস্থিত হয়।
স্প্যানিশ সাহিত্যের স্বর্ণযুগের সবচেয়ে প্রভাবশালী উপন্যাস হিসাবে আজও স্প্যানিশরা Don Quixote কে প্রথমেই স্থান দেয়, এবং Cervantes কে সেই সময়ের সবচেয়ে প্রভাবশালী লেখক হিসাবে আজও মনে রেখেছে – আর তার প্রমান এই স্কোয়ারের কেন্দ্রের Cervantes এর স্মৃতি স্তম্ভ ও তার উপন্যাসের কাল্পনিক চরিত্রের বাস্তব রূপের ব্রোঞ্জ ভাস্কর্য।
তাছাড়া, শহরের একদম ব্যস্ত কেন্দ্রে, স্পেনের রাজধানী শহরের বিশাল ও বিখ্যাত আকাশচুম্বী বিল্ডিং গুলোর প্রেক্ষাপটে, অনেকটা জায়গা নিয়ে একটু সবুজ ও খোলামেলা জায়গা অনেক স্থানীয় মানুষের টুকরো সময় কাটানোর এক প্রিয় ঠিকানাও বটে। এই স্কোয়ারে এসে মাদ্রিদ শহর যেন একটু নিঃশ্বাস নিতে পারে, একটু গল্প শুনতে পারে, নিজেদের স্বর্ণ যুগের স্মৃতিস্তম্ভের দিকে তাকিয়ে একটু থেমে গিয়ে আবার আধুনিক ব্যস্ততায় মিশে যেতে পারে, এগিয়ে যেতে পারে।