ছোট্ট ডাইরির পাতা গুলোর খাঁজে, পুরনো জ্যাকেটের পকেটে, কিংবা পুরনো ব্যাগে হঠাৎ পাওয়া এক চিলতে টিকিটের টুকরো গুলো অনেক ভ্রমণ স্মৃতি জাগিয়ে তুলতে পারে।
দুভ্রভনিক থেকে স্প্লিটে যাওয়ার বাসের টিকিট, কিংবা স্লোভাক লাইনের বাসে করে ভিয়েনা যাওয়ার টিকিট, বুদাপেস্টের মেট্রোর টিকিট বা হেলসিঙ্কির জাহাজে চড়ার টিকিট, ইতালির ক্যাপ্রি দ্বীপ বা পর্তুগালের সান্তা লুসিয়ার ফুনিকুলারে চড়ার টিকিট, নেপলসের মিউজিয়ামের টিকিট গুলো এক মুহূর্তে যেন ঐ দিনে, ঐ জায়গায়, ঐ সময়ে নিয়ে যায়। ছোট্ট ঐ টিকিট গুলোকে ছুঁয়ে দিয়ে যেন ঐ দিনটিকে অনুভব করতে পারি।
সাধারণত, যে কোন যাত্রার পরেই অনেকে টিকিট গুলো ফেলে দেয়, আমরাও দিই, কিন্তু, কোন কোন টিকিট যে কি ভাবে সঙ্গে থেকে যায়! আর অসময়ে, অকারণে পাওয়াও যায় – তাও এক আশ্চর্য বিষয়। অবাক হয়ে ভাবি, এই টিকিট এখানে কি করে এলো? এই গুলোকে তো সেইদিনেই ফেলে দিয়েছিলাম!
অনেক দিন পড়ে, সেই টিকিট গুলো নিয়ে কি করবো, ভাবতে গিয়ে দেখি – আরে এই কাগজের টিকিট গুলো তো এক ঐতিহাসিক ডকুমেন্ট! যে ভাবে অনলাইন টিকিট, ডিজিট্যাল মোবাইল টিকিট হচ্ছে, কাগজের আসল টিকিট গুলো তো মিজিয়ামের দিকে পা বাড়িয়েই রয়েছে – মানুষ তো আর কিছুদিন পড়ে ওদের কথা ভুলেই যাবে। তাই, টিকিট গুলোকে রেখেই দিলাম।
তবে, আরও একটু সার্চ করে দেখি – অনেকেই বেড়ানোর ঐ টিকিট গুলোকে সুন্দর করে সাজিয়ে, বাঁধিয়ে বসার ঘরে, কিংবা স্টাডি রুমে টাঙ্গিয়ে রাখতে ভালোবাসে – ভ্রমণ স্মৃতি বোধহয় মানুষের সবচেয়ে সুখের স্মৃতি, এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাওয়ার এক শারীরিক ও মানসিক পরিশ্রম থাকে, তবুও মানুষ ঐ দিন গুলোর স্মৃতিকেই বাঁধিয়ে রাখতে ভালো বাসে। হয়তো ভ্রমণ মানে মুক্তির আরেক নাম। আর, তাই ভ্রমণের ঐ টিকিট গুলো সেই দিন গুলোকে মনে করায়।