ডিসেম্বর জানুয়ারি মাসের ঠাণ্ডায় চিকেন পক্স – তাও আবার ফ্রান্সের ঠাণ্ডায়। কি করে সম্ভব? তা আবার এই বয়সে চিকেন পক্স? ও তো ছেলেবেলায় হয়। তোমার কি করে হল? ছেলেবেলায় হয় নি নাকি? অনেকেই সেই প্রশ্ন গুলো করেছিল।
কিন্তু, কি আর করা। গায়ে চিকেন পক্সের গুটি গুলো নিয়ে দিন কাটাতে হচ্ছিল। ফ্রান্সে আবার চিকেন পক্সের কোন ঔষধ দেয় না। না, কোন অ্যান্টিবায়োটিকও দেয় না। হয়তো দেয়, কিন্তু, আমরা যে ডাক্তারকে দেখাতাম , সে আবার খুব বেশী ঔষধ দিতে পছন্দ করতো না। সে বলল – ও নিজে নিজেই সেরে যায়।
যাইহোক, যথারীতি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে চিকেন পক্স সেরে গেলেও তার ছেড়ে যাওয়া কালো কালো দাগ গুলো তো ছিলই। সারা মুখে, গলায়, হাতে, পায়ে ঐ কালো কালো চাকা দাগ।
আবার ডাক্তারকে গিয়ে বলা হল – অন্তত দাগ গুলো সারানোর কোন ঔষধ দিন। ডাক্তার ঘাড় নেড়ে, হেসে, মাথা ঝাঁকিয়ে, কিছু ভিটামিন লিখে দিয়ে বলল – এই ভিটামিন গুলো খাও, আর ফার্মেসীতে বলে কোন স্কিন ক্রিম কিনে লাগাও।
অগত্যা ফার্মেসীর ফরাসী সুন্দরীকে গিয়ে আমার সমস্যার কথা বললাম। ফরাসী সুন্দরী যেন তৈরিই ছিল, ঔষধের র্যাকের সামনে গিয়ে একটা ক্রিম আমাকে দিয়ে বলল – পনেরো দিন লাগিয়ে দেখো, ঠিক হয়ে যাবে। আর এক বোতল জল দিল, স্প্রে করার জন্যে – বলল – থার্মাল স্প্রিং ওয়াটার, ত্বকের যে কোন প্রব্লেম সারিয়ে তোলার জন্যে দিনে তিনবার এই জল স্প্রে করতে পারো।
অগত্যা, শুরু হল সেই ক্রিম ও জল লাগানো – ক্রিমের নাম – Avène Cicalfate আর জলও ঐ কোম্পানির – Avène Thermal Spring Water। যথারীতি, সত্যিই দেখি কিছুদিনের মধ্যেই চিকেন পক্সের সমস্ত দাগ মিলিয়ে যেতে শুরু করল, একদমই গায়েব হয়ে গেল, বলা যায়।
Avène প্রডাক্টের সঙ্গে সেই ছিল আমার প্রথম পরিচয়। তারপর, আবার সেই সামারে, ইউরোপের প্রখর সূর্যের আলো আমাদের চামড়া পুড়িয়ে দিয়ে রীতিমত ফোস্কা ফেলে দিয়েছিল। আবার পরিচয় হল Avène এর সানস্ক্রিনের সঙ্গে। সেই থেকে, ইউরোপের প্রতি সামারে Avène এর সানস্ক্রিন লোশন ও Thermal Spring Water স্প্রে আমাদের সঙ্গী।
আর দেখেছি, ফরাসীদের প্রতিটি জিনিসের সঙ্গে এক গল্প জড়িয়ে থাকে, এই ক্রিম ও জলেরও এক গল্প আছে। গল্পটি শুরু হয়েছিল প্রায় তিনশো বছর আগে। দক্ষিণ ফ্রান্সের সবুজ পাহাড়ের গায়ে এক ছোট্ট গ্রাম – Avène, এই গল্পের পটভূমি।
চলবে