রিগার লাল-সবুজ চার্চ (St. Gertrude Old Church, Riga, Latvia)

ঝকঝকে উজ্জ্বল সোনালি সেই সকালে, ঐতিহাসিক রিগা শহরের সীমানা ছাড়িয়ে একটু বাইরের দিকে পা বাড়াতেই চোখে পড়েছিল স্থানীয় মানুষের শোভাযাত্রা, সেই সোনালি সকালে হাসিখুশী মানুষরা দলে দলে হেঁটে চলেছিল বড় রাস্তা ধরে – ওদের পড়নে ছিল জাতীয় পোশাক, হাসি মুখে ছিল গান, সঙ্গে ছিল বাজনা – রিগার স্থানীয় কোন সঙ্গীত। সেই শোভাযাত্রা দেখার জন্যে পথের দুই পাশে অসংখ্য মানুষ জমায়েত হয়েছিল।

আর আমরাও যেন কি ভাবে সেই ভিড়ের অংশ হয়ে গিয়ে, শোভাযাত্রা দেখতে দাঁড়িয়ে গিয়েছিলাম – আসলে দিনটি ছিল রিগার জাতীয় দিবস। কিন্তু, সেই ভিড়ের প্রেক্ষাপটে, রাস্তার মোড়ে, আকাশ ছোঁয়া চূড়ার ক্যাথিড্রালটির দিকে ঠিকই নজর চলে গিয়েছিল।

ইউরোপের ঐতিহাসিক শহর গুলোর গায়ে ঐতিহাসিক ছবি তৈরি করতে মধ্য যুগের অলংকৃত ক্যাথিড্রাল গুলোর এক বিশেষ অবদান আছে বলে মনে হয় – রিগায় আমাদের সেই উজ্জ্বল দিনের ছবিটিকেও যেন সম্পূর্ণ সুন্দর করে তোলার জন্যে ঐ ক্যাথিড্রালের তীব্র ভূমিকা ছিল।

যেখানে বড় রাস্তা দুই ভাগে ভাগ হয়ে চলে গেছে, সেই Gertrudes Street ধরে হাঁটলে একদম সামনেই নিও-গথিক স্টাইলের ক্যাথিড্রালটিকে চোখে পড়তে বাধ্য – বিশেষ করে যারা রিগা শহরকে দেখতে যায়, ঐ সুন্দর ক্যাথিড্রালটি ঠিকই চোখে পড়ে। রিগা শহরে ঐ কোণে নিও-গথিক ক্যাথিড্রালটিকে অনেকটা শৈল্পিক মনুমেন্টের মতোও মনে হতে পারে।

লাল ইটের তৈরি ক্যাথিড্রালটির আকাশ ছোঁয়া ছুঁচলো সবুজ ছাদ তামা দিয়ে তৈরি। এই ক্যাথিড্রালের সঙ্গে রিগার প্রাচীন জার্মান সম্প্রদায়ের যোগাযোগ ছিল। মধ্যযুগে, রিগার ঐতিহাসিক শহরের যে সুরক্ষা দেওয়াল ছিল – এই চার্চের অবস্থান সেই দেওয়ালের বাইরে, তাই যে কোন যুদ্ধে আক্রমণ থেকে রক্ষা পায় নি এই চার্চ। বার বার এই চার্চ ধ্বংস হয়েছিল – পনেরো শতাব্দী থেকে অন্তত পক্ষে সাতবার এই চার্চ ধ্বংস ও পুনর্গঠন হয়েছিল।

পনেরো শতাব্দীতে এই জায়গায় যে ক্যাথিড্রালটি ছিল – তা ছিল পাথরের তৈরি, আর বার বারই কোন না কোন যুদ্ধে সৈন্যরা এই চার্চ ধ্বংস করেছিল – কিন্তু, বহু সময়ের যুদ্ধ বিগ্রহের পরেও বার বারই নতুন ভাবে তৈরি হয়েছিল। আজ এই চার্চ যেন ঐতিহাসিক ও আধুনিক রিগার সংযোগ সূত্র, অতীতের এক কারুকাজময় মাস্টারপিস, আদরের মনুমেন্ট।

About abakprithibi

I see skies of blue and clouds of white, The bright blessed day, the dark sacred night And I think to myself what a wonderful world...........
This entry was posted in Europe, Latvia, Northern-Europe, Travel, Uncategorized and tagged , , . Bookmark the permalink.

মন্তব্য করুন

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  পরিবর্তন )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  পরিবর্তন )

Connecting to %s