এখানে প্রতি দিন তুলুস বাসীদের কেনাকাটার আসর বসে – তুলুস বাসীর নিত্য দিনের অতি প্রয়োজনীয় জায়গা এই প্লেস দে লা কার্মস। এই জায়গার ছন্দে তাই বছরের সারাটা সময়ই অনেকটা যেন গ্রাম্য অথচ উৎসব মুখর এক পরিবেশ দেখা যায়।
সে সকালে রোদ পিঠে নিয়ে খোলা কফির দোকানে বসে কাপে চুমুক দিতে দিতে সকালের খবরের কাগজে চোখ বুলিয়ে নেওয়া হোক বা সকালের বাজার সেরে নিতে নিতে জানাশোনা মানুষের সঙ্গে টুকিটাকি কথাবার্তা সেরে নেওয়াই হোক, কিংবা অতি যত্ন ভরে মনোযোগ দিয়ে জিনিস বেছে নেওয়াই হোক – এই জায়গার স্থানীয় জীবনের ছন্দটি বেশ ছন্দবদ্ধ। বিশেষ করে ডিসেম্বরের সকালে ঝকঝকে উজ্জ্বল সোনালি মিঠে রোদ ও ঠাণ্ডায় আসন্ন উৎসবের খুশ মেজাজটি যেন এই জায়গায় আরও বেশী করে বোঝা যায়।
সেই মধ্য যুগ থেকেই ইউরোপের ইতিহাস ও মানুষের গল্প বদলের সঙ্গে সঙ্গে তুলুস কেন্দ্রের এই কার্মস এলাকারও বদল ঘটেছে – সে ছিল এক বিবর্তনের গল্প। আজকের যে পথ ধরে তুলুস বাসী দৈনন্দিন জীবনের কেনাকাটা সাড়ে, তা একসময় রোমান সভ্যতার এক অংশ ছিল – তাই তুলুসের এই জায়গা ঐতিহাসিকতার দিক থেকেও প্রচুর গুরুত্ব দাবী করে – তুলুসে আগত টুরিস্টরাও তাই এই স্কোয়ারে এসে তুলুসের স্থানীয় ছন্দটিকে বুঝে নিতে চায়, দেখে নিতে চায়, অনুভব করতে চায়।
উনিশ শতাব্দীতে তুলুসের যে তিনটে বাজার তৈরি হয়েছিল তার মধ্যে এই বাজার অন্যতম। এক দিকে প্লেস দু সালিন ও এক দিকের এক্সুইরলের মাঝে এই জায়গা তুলুসের স্থানীয়দের মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় ও ব্যস্ত অংশ বলা যায়। মানুষের যাবতীয় প্রয়োজনীয় জিনিস পত্রের ঠিকানা এই জায়গা।
বর্তমানে এই প্লেস দে কার্মস এর অন্যতম আকর্ষণ বিশাল পার্কিং মার্কেট – প্লেস দে লা কার্মস এর এই বিশাল বিল্ডিংটিই এই স্কোয়ারের অনেক অংশ অধিকার করে। এই গোলাকার বিল্ডিং একাই একসঙ্গে তিনটে কাজ সারে – নীচে মানে গ্রাউন্ড ফ্লোরে বসে স্থানীয় জিনিসপত্র, মাছ, মাংস ও সবজির বাজার, উপর তলায় কার গাড়ি পার্কিং এর ব্যবস্থা ও এক অংশে তুলুসের পরিবেশ ও শহর প্ল্যানিং দপ্তর। আর তাছাড়া এই জায়গা প্রচুর ছোট রেস্টুরেন্ট ও ক্যাফেটারিয়ারও ঠিকানা। যে কোন জায়গার স্থানীয় ছন্দটি, সাধারণ জীবন যাপনের ছবিটি বাজার এলাকায় যতটা ফুটে ওঠে – তেমন করে বোধহয় অন্য কোথাও সাধারণ জীবন যাপনের ছবি দেখা যায় না।