আকারে খুব একটা বড় না হলেও, গথেনবার্গের এই মাছ বাজারের ভেতরের ও বাইরের গঠনশৈলী সম্পূর্ণ অন্যরকম। বাইরে থেকে এর গঠনশৈলী তথা ছাদের চূড়াটি অনেকটা ঠিক সাধারণ গথিক চার্চের মতো ছুঁচলো – তাই এর স্থানীয় নাম – Feskekôrka , যার সুইডিশ মানে – ফিশ চার্চ।
বাইরে থেকে দেখে বোঝা মুশকিল যে ভেতরে মাছ বিক্রি চলছে। উনিশ শতাব্দীতে গথেনবার্গের আর্কিটেক্ট Victor von Gegerfelt , পরীক্ষামূলক ভাবে এই চার্চের মতো বাজারটি তৈরি করেন – তার ডিজাইনের মূল প্রেরণা ছিল, মধ্যযুগীয় নরওয়ের কাঠের তৈরি stave church ও প্রাচীন পাথুরে গথিক চার্চের গঠন শৈলী। তাছাড়া, এই ফিশ চার্চের আরেকটি বিশেষ বৈশিষ্ঠ হল – এই বিল্ডিঙের ভেতরের ঘরগুলোয় কোন থাম নেই, এমনকি কোন ছোটখাটো পিলার পর্যন্ত নেই।
সামুদ্রিক মাছের অতিব বোটকা গন্ধের সঙ্গে যাদের কোনদিনই পরিচয় হয় নি, তারা এক নিমেষেই সামুদ্রিক মাছের তীব্র বোটকা গন্ধের দাপটে ছিটকে বেরিয়ে আসতে বাধ্য হবে। তবে, যারা সামুদ্রিক মাছ খেতে ভালোবাসে তাঁদের জন্যে তো গথেনবার্গের ফিশ চার্চকে স্বর্গ রাজ্যই বলা যায়।
যাবতীয় সামুদ্রিক মাছ সাজানো এই মাছ বাজারের ভেতরে রেস্টুরেন্ট যেমন আছে, তেমনি আছে প্রতিদিন সমুদ্র থেকে ধরা, টাটকা তাজা সামুদ্রিক মাছ – ঠিক যেন সমুদ্র উঠে এসেছে তার সামুদ্রিক মাছের সম্ভার নিয়ে – কি নেই এখানে – কুলোর মতো বড় সামুদ্রিক কাঁকড়া যেমন আছে তেমনি আছে গলদা চিংড়ির রকমারি সম্ভার – অথচ মারাত্মক ভাবে পরিষ্কার পরিছন্ন এক মাছ বাজার।
সেই জন্যেই মনে হয়, মৎস্যপ্রেমীরা এই ফিশ চার্চ দেখে রীতিমত আশ্চর্যই হয় – আর তাই, গথেনবার্গে এলে টুরিস্টরা একবার ফিশ চার্চ না দেখে ফেরে না। তাছাড়া, এই মাছ বাজার গথেনবার্গ শহরের আদি মানুষের সবচেয়ে পুরনো জীবিকা – মাছ ধরা – যা কিনা আজও সচল – তার এক প্রদর্শনী মিউজিয়ামও বলা যায়।