মহাবিশ্বের রহস্যের সমাধান যার সমীকরণে (এগারো)– আলবার্ট আইনস্টাইন (Albert Einstein)

Abakprithibi photo (4)

আইনস্টাইন Prussian Academy of Sciences এর সদস্যদের সামনে যে থিয়োরি পেশ করেছিলেন তা নিয়ে তিনি যথেষ্ট সন্তুষ্ট ছিলেন – এমনকি, সুইজারল্যান্ডে তাঁর ছেলেকে তিনি লিখেছিলেন – পরে বড় হয়ে তুমি জানতে পারবে, তুমি গর্বিত বোধ করবে। আজকের দিনটি বিজ্ঞানের ইতিহাসে এক মহান দিন হতে চলেছে, যে দিনে ফিজিক্সের ইতিহাস বদলে গিয়েছিল, আর তোমার বাবাই সেই বদল ঘটিয়েছে।

কিন্তু, তিনি দেখলেন, জেনারেল থিয়োরির গণনায় আবার কিছু ভুল রয়ে গেছে – কিছু দিন পরে তিনি আবার জেনারেল থিয়োরি অফ রিলেটিভিটির নতুন সংস্করণ করেছিলেন।

জেনারেল থিয়োরি অফ রিলেটিভিটিকে সম্পূর্ণ ভাবে প্রকাশিত করার আগে তিনি পুরোপুরি সন্তুষ্ট হতে চাইছিলেন, বার বার অংক কষে দেখছিলেন, কিন্তু কোথাও গিয়ে আটকে যাচ্ছিল – আবার এদিকে Hilbert  কে নিয়েও তাঁর একটু সংশয় ছিল – যদি Hilbert  তাঁর আগেই জেনারেল থিয়োরি অফ রিলেটিভিটির ফাইনাল ইকুয়েশন প্রকাশিত করে দেয়! আইনস্টাইনের দীর্ঘ দিনের কাজে যদি Hilbert  দখল করে বসে!

হঠাৎই আইনস্টাইন দেখলেন – তাঁর কষা সমস্ত দীর্ঘ জটিল ইকুয়েশন গুলো যেন একই দিকে নির্দেশ করছে, যে ইকুয়েশনের সমাধান তিনি ১৯১২ সালেই করেছিলেন – কিন্তু, তিনি সেই ইকুয়েশন ও সমাধানকে তখন খারিজ করে দিয়েছিলেন – তখন তাঁর মনে হয়েছিল, সেই সমাধান গুলো অসম্ভব, হতে পারে না।

কিন্তু, এখন যখন, অনান্য সম্ভাব্য সমস্ত সমাধান তিনি গণনা করে দেখলেন – তিনি পুরনো সেই সমাধানেই ফিরে গেলেন।

তিন বছর আগের সমাধানই ঠিক ছিল – এত দিন ধরে জেনারেল থিয়োরি অফ রিলেটিভিটির প্রমান তাঁর ডেস্কের ড্রয়ারেই ছিল!

আইনস্টাইন কিন্তু তাতে আরও খুশী হয়ে ছিলেন – কারণ এতো দিনে পুরনো সেই সমাধান যেন তাঁর কাছে আরও স্পষ্ট হয়েছিল।

তিনি দেখলেন – তাঁর জটিল গাণিতিক থিয়োরির উত্তর ও ব্যখ্যা, বহু প্রাচীন কালের  জ্যোতির্বিদদের এক ধাঁধাঁর সরল সমাধান দিতে পারে – প্রাচীনকালে জ্যোতির্বিদরা, সূর্যের সবচেয়ে কাছের গ্রহ বুধের কক্ষপথের এক আশ্চর্য আচরণ লক্ষ্য করেছিল – বুধ কখনোই একই পথে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে না – প্রতিবারই এক অন্য পথ অবলম্বন করে – বুধের কক্ষপথ অনেকটা ঠিক ফুলের পাপারির মতো ছড়ানো – আর বুধের সেই আশ্চর্য, অদ্ভুত কক্ষপথকে নিউটনের গ্রাভিটির সূত্র দিয়ে কিছুতেই ব্যাখ্যা করা যায় নি।

আইনস্টাইন ভাবলেন, সেই প্রাচীন ধাঁধাঁর উত্তর হয়তো আইনস্টাইনের গ্রাভিটির সূত্রেই লুকিয়ে আছে – আইনস্টাইন তাঁর গ্রাভিটির সূত্র দিয়ে গণনা করে দেখে আশ্চর্য হয়ে গেলেন – তাঁর গণনার সঙ্গে বুধের কক্ষপথ, সম্পূর্ণ ভাবে মিলে গেছে – তাঁর মানে আইনস্টাইন ঠিকই ভাবছিলেন, আইনস্টাইনই ঠিক ছিলেন। আইনস্টাইনের কাছে সে ছিল মহাবিশ্বের রহস্য সমাধানের এক সন্ধিক্ষণ।

তাঁর কষা সমীকরণের সঙ্গে মহাবিশ্বের ধাঁধাঁর উত্তর সম্পূর্ণ মিলে গেছে, মহাবিশ্বের অসীম রহস্যের সমাধান তাঁর সামনে – তিনি নিজেও খুব আশ্চর্য হয়েছিলেন, অভিভূত হয়েছিলেন, আনন্দিত হয়েছিলেন, উৎফুল্ল হয়েছিলেন।

যে সমীকরণের সমাধানের জন্যে তিনি দিনের পর দিন ভেবেছিলেন, অংক কষেছিলেন – আইনস্টাইনের তো আনন্দিত হওয়ারই কথা, কিন্তু, এদিকে যে Hilbert   সমসাময়িক সময়ে, আইনস্টাইনের গ্রাভিটির অংকটির সমাধান করে ফেলছিলেন।

কিন্তু, Hilbert  শুধু অংকের সমাধানই করেছিলেন, ফিজিক্সের লজিক নিয়ে ভাবেন নি – তারপর অবশ্য Hilbert  ও মেনে নিয়েছিলেন যে,  জেনারেল থিয়োরি অফ রিলেটিভিটি আসলে আইনস্টাইনের মস্তিষ্কের এক জটিল ফসল।

এবার, ১৯১৫ সালের শেষের দিকে, আইনস্টাইন তাঁর ফাইনাল জেনারেল থিয়োরি অফ রিলেটিভিটির সমীকরণ, যেখানে আইনস্টাইন গ্রাভিটিকে সম্পূর্ণ ভাবে ব্যাখ্যা করেছিলেন, তা Prussian Academy of Sciences এর সদস্যদের সামনে পেশ করলেন। সেখানে তিনি জেনারেল থিয়োরি ও রিলেটিভিটি ব্যাখ্যা করেছিলেন – এতোই জটিল ও কঠিন ছিল সেই সমীকরণ ও ব্যাখ্যা, মহাবিশ্বকে এক সম্পূর্ণ অন্যরকম দৃষ্টি ভঙ্গি দিয়ে দেখা, সেই সময় অনেকেরই তা বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়েছিল, আইনস্টাইন পরবর্তী বিজ্ঞানীরা তাঁর মারাত্মক জটিল ও কঠিন জেনারেল থিয়োরি অফ রিলেটিভিটিকে একটু সহজ করার চেষ্টা করে বলেছিলেন – Spacetime tells matter how to move; matter tells spacetime how to curve

About abakprithibi

I see skies of blue and clouds of white, The bright blessed day, the dark sacred night And I think to myself what a wonderful world...........
This entry was posted in Inspirational and tagged , , , , . Bookmark the permalink.

মন্তব্য করুন

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  পরিবর্তন )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  পরিবর্তন )

Connecting to %s