বৈশাখ মাসে, না দক্ষিণ ফ্রান্সে তো ঠিক বৈশাখ নয়, সামারের সময়, মানে, জুলাই অগাস্ট মাসে দক্ষিণ ফ্রান্সের ওদ নদীতে ঠিক হাঁটু জলই থাকে – অন্তত, সামারের নির্জন দুপুরে মাঝ নদীর স্বচ্ছ জলে নেমে শামুক, গেঁড়ি গুগলি খুঁজতে ব্যস্ত ফরাসী ভদ্রলোককে দেখে তো তাই মনে হয়। মাঝ নদীতেও জল বড় জোর ওর হাঁটু ছুঁয়েছে, নদীর উপরে সেতুটির উপর দিয়ে যাওয়ার সময় নীচে তাকালে স্বচ্ছ জলের মধ্যে শ্যাওলার আঁকিবুঁকি, শ্যাওলা ঢাকা পাথর স্পষ্ট নজরে পড়ে।
ওদ নদী পাইরেনিস পাহাড় শ্রেণীর পাহাড় থেকে যাত্রা শুরু করে প্রায় দুশো কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে মেডিটেরিয়ান সমুদ্রে গিয়ে মিশেছে। আর এই দীর্ঘ পথে পড়েছে কারকাসনে শহর সহ দক্ষিণ ফ্রান্সের আরও কতো শহর গ্রাম, লোকালয়। আর এই কারকাসনে শহরের কাছে এসে ওদ নদীর পাহাড়ি চঞ্চল গতিবেগ যেন একটু স্তিমিত হয়েছে, নদী হয়েছে একটু বিস্তৃত।
যদিও মেডিটেরিয়ান আবহাওয়ায় কখনো অতিবৃষ্টির ফলে দক্ষিণ ফ্রান্সের নদী গুলোয় উল্লেখযোগ্য বন্যা বা জলস্ফীতি হয় না, কিন্তু, প্রকৃতিতেও তো ব্যতিক্রম হয়। তাই, একবার দক্ষিণ ফ্রান্সে অতিবৃষ্টি হয়ে, এই ওদ নদী উপত্যকা বন্যায় ভেসে গিয়েছিল – অবশ্য সে বহু আগের কথা।
দক্ষিণ ফ্রান্সের এই ওদ নদী যখন দক্ষিণ ফ্রান্সের কারকাসনে শহরের লোকালয়ের উপর দিয়ে যায়, এক জায়গায়, নদীর প্রেক্ষাপটে থাকে কারকাসনের বিখ্যাত ঐতিহাসিক ক্যাসল। শতাব্দী প্রাচীন এই ক্যাসলকে ওদ নদী যেন বড় মমতায় আলিঙ্গন করতে চায় – হলুদ দুপরের মায়াবী আলোয়, পাহাড়ের উপরে কারকাসনের ক্যাসল ও ওদ নদীর যুগলবন্দীতে যেন তৈরি হয় এক রূপকথার ছবি, আর সেই ছবি দেখতেই কারকাসনে শহরে প্রতি বছর প্রচুর টুরিস্টের আগমন হয়।