I saw the angel in the marble and carved until I set him free.” – Michelangelo
সত্যিই কি মানুষ যে কোন পাথরের ভেতরে বন্দী এঞ্জেলকে মুক্তি দিতে পারে?
কেন পারবে না, ইচ্ছে, অধ্যবসায়, ধৈর্য থাকলেই পারবে, ইতিহাস তো সাক্ষী, কতো পাথরের ভেতরে বন্দী দেবদূত, পরীরা মুক্তি পেয়েছে মানুষেরই হাতে। মানুষ চাইলে কি না পারে?
কিন্তু, পাথর যদি ভেঙ্গে যায়?
ভাঙতেই পারে। কেউ কি দেখেছে মিকেলেঞ্জেলো ঠিক কত নম্বর পাথর কেটে ভাস্কর্য তৈরি করেছিলেন? আসলে ইতিহাস মানুষের সৃষ্টিকে দেখে, মনে রাখে, ধরে রাখে। মানুষের ধৈর্য, অধ্যবসায়, ভাবনা – এ গুলোর কোন মাপকাঠি নেই। কেউ জানে না, ঠিক কতটা দৃঢ়তা, মানসিক একগ্রতা নিয়ে পাথরের গায়ে ছেনি হাতুরি চালিয়ে চালিয়ে অমনি সুন্দর এক শিশু রূপী দেবদূতের মুখ ফুটিয়ে তোলা যায়। যে মুখ যুগ যুগ ধরে পৃথিবীর বুকে থেকে যায়।
শোণা যায়, সিস্টিন চ্যাপেলের ছাদে ছবি আকার সময়ে মিকেলাঞ্জেলো প্রথমে বেশ কিছু ভুল করেছিলেন, কিন্তু, আবার প্রথম থেকে শুরু করেছিলেন, এমনকি, সিস্টিন চ্যাপেলের ছাদে মাচান বেঁধে ঘাড় উঁচু করে ছবি আঁকতে আঁকতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন, তবুও হাল ছাড়েন নি। শুধু তাই নয়, খুব কাছ থেকে ছবি গুলো যখন আঁকছিলেন ছবি গুলোর আকার তার নিজের কাছে বড়ই লাগছিল কিন্তু, যখন ছাদের এক অংশ আঁকা শেষ করে নীচে এসে দেখলেন ছবির চরিত্র গুলো এতোই ছোট যে নীচ থেকে স্পষ্ট করে বোঝাও যাচ্ছে না, তাই, ছাদের পরের অংশের ছবি গুলো বড় করে এঁকেছিলেন, যাতে নীচ থেকে স্পষ্ট করে বোঝা যায় – তাই, আদম ও ভগবানকে নীচ থেকেও বোঝা যায়।
পাথরের কথা ছাড়ো, আজকের যুগে কে আর পাথর কেটে মূর্তি তৈরি করতে চায়? মিকেলাঞ্জেলো বহু আগে যে কথা বলে গিয়েছিলেন আজও কি সেই কথার কোন যুক্তি আছে?
কেন থাকবে না। কথাটি তো শুধু পাথরের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য, তা তো নয়। আমাদের ভেতরে চিন্তা কি বন্দী নয়? কোন কিছু করার চিন্তা, পৃথিবীর বুকে দাগ কেটে যাওয়ার চিন্তা, কাজে ভালো করার চিন্তা – সবই যেন এক জালের মধ্যে বন্দী। আমরা কি সত্যিই সেই চিন্তা গুলোকে মুক্তি দিয়ে এক রূপ দিতে পারি? প্রতিদিন কতো কথা হয় – কিন্তু, সেই কথা গুলোকে মুক্তি দিয়ে একটি কবিতা বা গানের রূপ দিতে পারি কি? পারি না।
তাই তো সেই মানুষ গুলোর কথাকে মনে করার চেষ্টা করি, যাদের অবদানে মানুষের ইতিহাস লেখা হয়েছে। কি ছিল তাদের কাজে, কথায় যা আজও মানুষকে প্রেরণা দিয়ে যায়, ভাবায়।
“আমরা কি সত্যিই সেই চিন্তা গুলোকে মুক্তি দিয়ে এক রূপ দিতে পারি? প্রতিদিন কতো কথা হয় – কিন্তু, সেই কথা গুলোকে মুক্তি দিয়ে একটি কবিতা বা গানের রূপ দিতে পারি কি? পারি না।” – চমৎকার এই অভিব্যক্তি।
একটু দেরিতে হলেও ঈদের শুভেচ্ছা রইলো। ভালো থাকুন নিরন্তর।
ধন্যবাদ, ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো। আপনাকেও অশেষ শুভেচ্ছা জানাই। ভালো থাকবেন।