আভোকাদো – সবজি না ফল! প্রথমে একে কোন পর্যায়ে ফেলব বুঝে উঠতে পারি নি, যদিও দক্ষিণ ভারত বেড়াতে গিয়ে আভোকাদোর সঙ্গে দেখা হয়েছিল, কিন্তু, আভোকাদোর প্রাচুর্য কিন্তু তুলুসেই প্রথম দেখলাম। এবং আভকাদোর নানা রকমের রেসিপির সঙ্গে পরিচিত হলাম।
তুলুসের সুপার মার্কেটে আভোকাদোকে সবজির সঙ্গে রাখলেও আসলে আভোকাদো এক ধরণের ফল। সাধারণত মেক্সিকো ও মধ্য আমেরিকার আদি বাসিন্দা, কিন্তু, প্রচুর গুণের জন্যে এই ফলটি সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে গেছে।
পাকা আভোকাদো অনেকটা বাটারের মতো – ফল অথচ বাদামের মতো তৈলাক্ত। বাটারের বদলে অনেকে টোস্টে লাগিয়ে খেতে পারে। ফরাসীরা তো আবার স্যালাদে খুবই আভোকাদো ব্যবহার করে – সেদ্ধ আলু, ও পাকা আভোকাদো টুকরো করে কেটে, একটু নুন, লেবুর রস ও অলিভ ওয়েল ছিটিয়ে দিয়ে তৈরি করে স্যালাদ।
স্যালাদ ছাড়াও আভোকাদো দিয়ে চমৎকার চাটনি তৈরি করা যায়, অবশ্য আভোকাদোর সেই চাটনির আবার গালভরা এক মেক্সিকান নামও আছে – Guacamole , টর্টিলা বা চিপ্সের সঙ্গে এই Guacamole চমৎকার যায়।
আভোকাদোর শাঁস গুলো বের করে নিয়ে একটু টোম্যাটো কুচি, পেঁয়াজ, কাঁচা লঙ্কা, ধনেপাতা কুচি, লেবু রস, নুন, গোলমরিচ গুড়ো ইত্যাদি দিয়ে ভালো করে মেখে নিয়ে তৈরি হয়ে যায় ভিটামিন ও মিনারেল সম্বৃদ্ধ এক সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যকর Guacamole । এক টুকরো টর্টিলা বা চিপসের ডগায় একটু Guacamole নিয়ে শুরু করা যায় ছুটির দিনের বৈকালিক আড্ডার আসর, সঙ্গে অবশ্যইএক কাপ চা থাকতে হবে।
অনেক ফরাসীরা আবার আভোকাদোকে স্যুপের মতো করেও খায়। Guacamole তৈরির সমস্ত উপকরন গুলোকে মিক্সিতে পিষে নিয়ে তৈরি হয়ে যায় এক স্বাস্থ্যকর স্যুপ।
প্রচুর ভিটামিন, এন্টি অক্সিডেন্ট, মিনারেল, হার্ট হেলদি মনো স্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড সম্বৃদ্ধ এই আভোকাদো ফলটির আরও যে কতো গুণ – গবেষণায় দেখা গেছে, আভোকাদো রক্তের কোলেস্টরল ও ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে, রক্তে বাজে কলেস্টরলের মাত্রা কমিয়ে দিয়ে ভালো কলেস্টরলের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে।
এমনকি, যারা রোগা হতে চায়, আভোকাদো তাদের জন্যেও ভালো, আভোকাদো খেলে খিদেও অনেক কমে যায়। যে ফলের এতো গুণ, তাকে এড়িয়ে কি থাকা যায়? তাই, বাজার ব্যাগের এক কোণে ঠিকই একটু জায়গা করে নেয়।