পোর্তোর চার্চে (Igreja de São Francisco, Porto, Portugal)

পোর্তো শহরের কেন্দ্রে কয়েক কদম চললেই এক গথিক চার্চ টুরিস্টদের চলার পথ আটকায়, নজর টেনে নেয়, দু’দণ্ড থামিয়ে দেয় – পোর্তো শহরের এক বিখ্যাত প্রতীক এই চার্চ ‘Igreja de São Francisco’ বা Church of Saint Francis । বাইরে থেকে এই চার্চ দেখে প্রথম দর্শনেই চমক নাই লাগতে পারে, ইউরোপে এমনি চার্চ তো দেখাই যায় –কিন্তু ভেতরে গেলে আশ্চর্য হতে হয়, প্রচুর ঐশ্বর্য পূর্ণ এই চার্চের অন্দরসজ্জা, সতেরো ও আঠারোর সোনার অন্দরসজ্জা দেখে দর্শকদের চমক লাগে  – কথিত আছে, প্রায় চারশো কেজি সোনা দিয়ে এই চার্চের ভেতর সাজানো হয়েছিল।

এতো দূরে এসে দর্শকদের মনে শুধু একটাই দুঃখ রয়ে যায় – ইউনেস্কোর হেরিটেজ এই চার্চের অন্দর সজ্জার ফটো তোলা নিষিদ্ধ – ইউরোপের কোন চার্চে এই প্রথম কোন নিষেধাজ্ঞা দেখা গেল। সাধারণত ইউরোপের যে কোন চার্চের ভেতরে ফটো তোলার জন্যে কোন বাধা নেই।

যাইহোক, এই চার্চ চোদ্দ শতাব্দীর শেষ দিকে গথিক স্থাপত্য অনুসারে তৈরি হয়েছিল। তারপরে, নানা সময়ে নানান ধরণের স্থাপত্যের সংযোজন হলেও দক্ষিণে দুরো নদীর দিকের অংশটি এখনো সম্পূর্ণ গথিক। বর্তমানে এই চার্চে ধর্মীয় অনুষ্ঠান আর হয় না, কিন্তু টুরিস্টদের জন্যে চার্চের এক ছোট্ট মিউজিয়াম আছে। তাছাড়া, এই চার্চ পোর্তো শহরের হাজার মানুষের শেষ ঠিকানা – এখানে হাজার মানুষের সমাধিও আছে।

ভেতরে এক ঠাণ্ডা শান্ত পরিবেশ, বিশাল গথিক রোজ উইন্ডো দিয়ে আলো ঠিকরে ভেতরে এসে এক অদ্ভুত আলো ছায়ার পরিবেশ তৈরি হয়েছে। ভেতরে এসে বোঝাই যায় না, পোর্তো শহরের কেন্দ্রেই এই চার্চ – বিশাল প্রাচীন গথিক দেওয়াল ভেদ করে আধুনিক কোন শব্দই যে ভেতরে পৌঁছয় না, তাই এক ভেতরে এক শান্ত নিস্তব্ধতা জড়ানো – তাই এখানে টুরিস্টরা কিছুক্ষণ বসে, সেই শান্তি, সেই প্রাচীনতাকে একটু গায়ে মেখে নেয়, অনুভব করে নেয়। যে অনুভব হয়তো মনকে আরও বড়, আরও প্রসারিত করে, আরও স্বাধীন করে। এক প্রাচীনের স্মৃতি নিয়ে ফিরি – কোন এক ক্লান্ত দুপুরে হয়তো আবার সেই প্রাচীন শান্তির গহন অনুভূতিকে একটু ছুঁয়ে দেখবো।

অজানা's avatar

About abakprithibi

I see skies of blue and clouds of white, The bright blessed day, the dark sacred night And I think to myself what a wonderful world...........
This entry was posted in Europe, Portugal, Southern-Europe, Travel and tagged , , , . Bookmark the permalink.

এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান