এখানে, গল্পের ডাইনোসর কি কি করতে পারে তা জানতে হলে অতি অবশ্যই জুরাসিক ওয়ার্ড সিনেমাটি দেখতে হয় – আর মানুষের তৈরি সেই ভয়ংকর ফ্রেঙ্কেনস্টাইন কি পর্যায়ে তাণ্ডব লীলা চালাতে পারে, তা কল্পনা করার শক্তি হলিউডেরই আছে – তারা দর্শকদের কল্পনা শক্তির এক অন্যরকম পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারে।
কিন্তু, এই সিনেমা দেখতে হলে খুব বেশী গল্প খুঁজতে যাওয়া বৃথা – গল্পে খুব বেশী হেরফের না করেই সিনেমাটি আলোড়ন তুলেছে, হলিউডের সমস্ত বক্স অফিস রেকর্ড ভেঙ্গে দিয়েছে। যেখানে গল্পের নায়ক বা ভিলেন অতিকায় ডাইনোসর – সেখানে অহেতুক গল্পের কি প্রয়োজন?
অবশ্য, এই সিনেমার গল্পের এক নতুন সংযোজন হল – বিজ্ঞানীরা এক জেনেটিক্যালি মডিফাইড হাইব্রিড ডাইনোসর – ইনডোমিনাস রেক্স, তৈরি করেছে। মারাত্মক চেহারার এই ডাইনোসর ইনফ্রা রেড অনুভব করতে পারে, জঙ্গলের সঙ্গে ক্যামুফ্লেজ করতে পারে, মানুষের ইঙ্গিত বুঝতে পারে, মারত্মক বিপজ্জনক, অসামাজিক, শিকারি এই ডাইনোসর কি কি করতে পারে তা কল্পনারও বাইরে।
প্রায় দশ বছর ধরে যে সিনেমা তৈরি হয়েছে, সেই সিনেমা অন্ধকার হলে বসে অনেকটা দম বন্ধ করেই দেখতে হয়, থ্রি ডি সিনেমার ‘ইডোমিনাস রেক্স’ ডাইনোসরের লেজের ঝাপটা মুখের কাছেই অনুভব করা যায়। সিনেমাটির এক জায়গায় একটু নস্টালজিক ছোঁয়াও আছে – এখানে ডাইনোসর সিরিজের প্রথম সিনেমা জুরাসিক পার্কের ধ্বংসাবশেষ দেখা যায়।
আসলে সিনেমাটির লোকেশন কোস্টা রিকার দ্বীপ Isla Nublar যেখানে নব্বই শতকের জুরাসিক পার্ক ছিল। প্রায় কুড়ি বছর পরে জুরাসিক পার্কের সেই জায়গায় নতুন এক পার্ক খোলে ‘জুরাসিক ওয়ার্ল্ড’ – আর সেই পার্ক আধুনিকতার দিক দিয়ে, সুরক্ষার দিক দিয়ে সম্পূর্ণ আধুনিক, বিজ্ঞান সম্মত – প্রচুর মানুষ সেখানে ডাইনোসর দেখতে যায়।
প্রতি বছর সেই থিম পার্কে এক নতুন ডাইনোসর যোগ হয়, তাই পার্ক কতৃপক্ষ দর্শকদের চমক দেওয়ার জন্যে মরীয়া হয়ে জেনেটিক্সের সাহায্যে এক নতুন ডাইনোসর তৈরি করে – ইনডোমিনাস রেক্স। অপূর্ব প্রকৃতির মধ্যে শান্ত ভাবে সব ঠিকই চলছিল, কিন্তু, গল্পের ভয়ংকর মোড় নেয়, যখন ইনডোমিনাস রেক্স পালিয়ে যায়, তারপর তো ডাইনোসর একের পর এক ধ্বংসলীলা চালিয়ে যায়।
যাইহোক, থ্রি ডি সিনেমাটি দেখে হল থেকে বেরিয়েও এর সাউন্ড ট্র্যাক, দৃশ্য মাথায় ঘোরে। মনে হয়, সিনেমাটি একটু রূপক ধর্মী কি? কে জানে? তবে যুক্তি, তর্ক, লজিক ইত্যাদি সম্পূর্ণ ভুলে গিয়ে একবার দেখার মতো এই সিনেমা।