পাহাড়ি শহর জেনেভার পথে হেঁটে ক্লান্ত হলে পুরনো জেনেভা থেকে একটু দূরে অবস্থিত সবুজ বোটানিক্যাল গার্ডেনের ছায়ায় বসে একটু জিরিয়ে নিতে কোন বাধা নেই। জেনেভার ডিপ্লোম্যাটিক অঞ্চলের পাশে জনসাধারণের জন্যে উন্মুক্ত এই বিশাল বাগান, গরমের উজ্জ্বল দুপুরে শান্ত শ্যামল ঠাণ্ডা ছায়ায় ডিপ্লোম্যাটদের যেন আরও ডিপ্লোম্যাটিক চিন্তার খোরাক যোগায় এই বাগান।
পৃথিবীর নানা প্রান্তের, ছয় মহাদেশের প্রায় ষোল হাজার প্রজাতির গাছ গাছড়া দিয়ে সাজানো এই বাগানের পরিবেশ। বড় গাছ থেকে শুরু করে নানা ধরণের ওষধি গাছ, নানা ধরণের ফুল গাছ, মসলার গাছ, দুষ্প্রাপ্য গাছের জাতি – সবই এখানে দেখা যায় এবং প্রত্যেক গাছ গাছড়াকে তার জন্মস্থান ও উৎপত্তির ইতিহাস অনুসারে সাজানো হয়। প্রতিটি গাছের পাশে এক ছোট্ট সাইন বোর্ডে গাছের ইতিহাস, উৎপত্তি, বৈজ্ঞানিক নাম ইত্যাদি সুন্দর করে লেখা। বাগানের ভেতরে এক পাশে গ্রিন হাউসেও নানা ধরণের গাছ বিশেষ তাপমাত্রায় বাড়ে।
একশো বছর আগের এই বাগান জেনেভা বাসীর জন্যে শুধু যে নির্জনে সময় কাটানোর জায়গা তা নয়, বোটানি শিক্ষার এক মুক্ত পাঠশালাও বটে – গরমের সময়ে অনেক স্কুলের ছাত্র ছাত্রীরা এখানে শিক্ষামূলক ভ্রমণের জন্যে আসে। বাগানের ভেতরে এক লাইব্রেরী, গবেষণাগার ছাত্র ছাত্রীদের বোটানি শিক্ষায় ইন্ধন যোগায়। আবার এই বাগানকে বলা যেতে পারে, জেনেভার ফুসফুস – প্রতি মুহূর্তে জেনেভার দূষণ শুষে নিয়ে দিচ্ছে বিশুদ্ধ বাতাস।
শুধু কি গাছই এই বাগানের সৌন্দর্য বাড়ায়? এক্কেবারেই না, বাগানের এক পাশে নানা ধরণের বিরল পাখির চিড়িয়াখানা, নানান ধরণের দুর্লভ ও নিরীহ প্রাণী এই বাগানের শোভা আরও বাড়িয়ে তুলেছে। বাগানের ভেতরে সবুজের মধ্যে গাছের ছায়ায়, আঁকা বাঁকা ছোট রাস্তা ধরে হেঁটে কিংবা বাগানের বেঞ্চে বসে অনেকেরই প্রকৃতির বুকে বিশুদ্ধ সুইস সময় কেটে যায়।
Great post! Beautiful trees!
Thank you.