February 2009, Cannes, France
লাল গালিচায় হাঁটার জন্যে সারা পৃথিবীর রুপোলী পর্দার তারকার ভিড় হয় ফ্রান্সের এই সমুদ্র শহর কান্স-এ। তাই সারা পৃথিবীর সংবাদ মাধ্যমের ক্যামেরা তাক করা থাকে এই শহরের তারকা, চলচিত্র পরিচালক, প্রযোজক ভিড়ের দিকে। সেই সময়ে পাপারাতজির গোপন ক্যামেরা এই শহরের আনাচে কানাচে। ১৯৪৬ সাল থেকে শুরু করে প্রতিবছর এখানে মহা সমারোহে আন্তর্জাতিক চলচিত্র উৎসব হয় সে তো জেনেই এসেছি আমাদের দেশের সদা সক্রিয় টেলিভিশন চ্যানেলের জন্যে।
কিন্তু, অন্য সময়ে কান্সের যে এক সহজ, শান্ত, সুন্দর রূপ থাকতে পারে তা এখানে না এলে জানা যেত না। সকালেই এখানে পৌঁছেছিলাম, কান্স শহরটি তখনও ফেব্রুয়ারির ঠাণ্ডা সকালের আড়মোড়া ভেঙ্গে পুরো জেগে ওঠে নি।
এখানে চলচিত্র উৎসবের সময়টুকু ছাড়া অন্য সময় দিন চলে ধীর শান্ত গতিতে, নিজের ছন্দে। মেডিটেরিয়ান সমুদ্র লাগোয়া দামী হোটেলের প্রাইভেট বীচে গা এলিয়ে দেওয়া মানুষ, টুরিস্টদের চলা ফেরা, সমুদ্র ঘেঁষা বড় রাস্তা Promenade de la Croisette যে রাস্তা জুড়ে আন্তর্জাতিক চলচিত্র উৎসবের সূচনা হয় তার দু’পাশে সারি সারি পাম গাছ, রাস্তার দু’পাশে নামকরা ব্রান্ড-এর দামী শোরুম, কান্স বন্দর, পুরনো ঐতিহাসিক কান্স – এই সব নিয়ে ফ্রেঞ্চ রিভেইরার এই বিলাস বহুল শহর কান্স।
নতুন কান্সের গ্লামার দুনিয়ার পাশাপাশি পুরনো কান্সের ঐতিহাসিক রূপ ও আছে। Le Suquet কান্সের ঐতিহাসিক পুরনো অংশ। কান্স শহর থেকে পাহাড়ের উপরে এই অংশের পুরনো ক্যাসল দেখা যায়। বন্দরের ঠিক উল্টো দিকে পাহাড়ি পাথুরে রাস্তা পুরনো Le Suquet এর দিকে উঠে গেছে।
শহরের এই পুরনো অংশে সরু, খাড়া পাথুরে বাঁধানো গলি খুঁজিতে অতি সহজেই নিজেকে হারিয়ে ফেলি।
প্রতিটি সরু গলিই উপরের দিকে চলে গেছে। উপরে পৌঁছে মেডিটেরিয়ান ও কান্স বন্দরের শ্বাস রুদ্ধকর দৃশ্যে থমকে যেতেই হয়।
Le Suquet পৌঁছে St Anne চ্যাপেলের পাশে ক্ষণিক থেমে মনমুগ্ধকর দৃশ্যের ফটো নিতেই হয়। Musee de la Castre সেদিন বন্ধ ছিল।
কান্সে মধ্যযুগের ক্যাসল, পুরনো রোমান ভিলা, পুরনো দিনের বিশাল বাড়ী, ১৯শতকের স্থ্যাপত্য সবই বর্তমান।
Cobblestones এ বাঁধানো সরু পাহাড়ি রাস্তার দু’পাশে গায়ে গায়ে পুরনো দিনের স্থানীয় বাড়ীর গলি যেন এখানে এখনো এক পুরনো পরিবেশ ধরে রেখেছে। নতুন ও পুরনোর সহাবস্থান এই শহরে।
দিন শেষ হয়ে আসছে। লাস্যময়ী কান্স কে বিদায় জানিয়ে, পুরনো পাহাড়ি পাথুরে গলি দিয়ে নেমে এলাম, নিসে ফেরার বাসে চড়ে বসলাম।
Reblogged this on অবাক পৃথিবী (Abak-Prithibi) and commented:
. . .