রাতের কার্নিভ্যাল দে নিস (Carnaval de Nice, Nice, France)

February 2009, Nice, France

IMG_1032   IMG_1036

ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময় থেকে নিসের কার্নিভ্যাল শুরু হয়। দু’সপ্তাহের জন্য নিস উৎসবের সাজে আরও ঝক ঝকে হয়ে ওঠে। নিসের কার্নিভ্যালের সময় দিনে যেমন চলে ফুলের উৎসব, নানান অদ্ভুত পোশাক পরে শোভাযাত্রা, নাচ, গান – তেমনি রাতে কার্নিভ্যালের আসর আরও জম জমাট হয়ে ওঠে।

IMG_1111 IMG_1057        IMG_1034   IMG_1035  IMG_1040   IMG_1049 IMG_1050

রাতে হয় লাইট প্যারেড। এই লাইট প্যারেডও নিসের ফেব্রুয়ারি কার্নিভ্যালের অঙ্গ। রাতে নিসের মধ্যস্থল জুড়ে কার্নিভ্যালের লাইট জ্বলে ওঠে, আলোকিত হয়ে ওঠে জায়গাটা।

দূর থেকে শুধু লাইট দেখে প্রচুর মানুষ হেঁটে চলেছে রাতের এই লাইট প্যারেড দেখার জন্যে।

লাইট প্যারেডে বিশাল বিশাল  দৈত্যাকার পুতুল, তাঁদের আবার নানান সাজ, বড় খোলা ট্রাকে শোভাযাত্রা হয়। প্রতিটি ট্রাকের বিশাল  দৈত্যাকার পুতুল গুলিতে আবার নানান লাইটের খেলা।

এই বিশাল পুতুল গুলো বিশেষ যত্ন নিয়ে নামকরা আন্তর্জাতিক পত্র পত্রিকার আর্টিস্ট ও কার্টুনিস্টরা তৈরি করেন।

IMG_1029 IMG_1133 IMG_1018 IMG_1067

প্রতি বছর এই কার্নিভ্যালের বিষয় ঠিক হয়, যেমন ২০০৯ এর কার্নিভ্যাল দে নিসের থিম হল মুখোশের রাজা ‘Roi des Mascarades’ বা ‘King of Masquerades’।

মুখোশ কি ভাবে আসল মানুষটিকে লুকিয়ে ফেলতে পারে তারই এক নমুনা এই উৎসবের এ বারের থিমে। নানান রকম মুখোশের বিশাল বিশাল স্ট্যাচু, মুখোশের বিশাল মাথা ইত্যাদি দিয়ে সাজানো এই অদ্ভুত প্যারেড।

IMG_1122 IMG_1123 IMG_1130 IMG_1063 IMG_1069 IMG_1126   IMG_1066 IMG_1068

মুখোশের আড়ালে নিজেকে বদলে ফেলার এই উৎসবে নানান দল সেজেছে নানান মুখোশে। কেউ বা সেজেছে নামকরা কার্টুন চরিত্র, কেউ বা সেজেছে রাশিয়ান কাঠের পুতুল Matryoshka। জোকার, শকুন, বাজ পাখি, ড্রাগন, ডাইনোসর কি নেই এই মুখোশের ভিড়ে।

IMG_1099 IMG_1105IMG_1087 IMG_1096IMG_1072 IMG_1077

এক বিশাল কিম্ভূত স্ট্যাচু দেখে বেশ হাসি পেল – অনেক সরীসৃপ যেন স্তূপ করে রাখা আর প্রত্যেক সরীসৃপের চোখ উল্টে জিভ বেড়িয়ে গেছে। ধীরে ধীরে আমাদের সামনে দিয়ে বিশাল Parade float টা চলে গেল। পেছনে আরও কিছু সরীসৃপ মুখোশধারী মানুষ নাচতে নাচতে চলেছে।

IMG_1058 IMG_1054IMG_1079 IMG_1102 IMG_1108 IMG_1127

ইউরোপের নানান দেশ থেকে আসা নানান দলের নানান রকমের নাচ, গান, মুখোশের শোভাযাত্রা একে একে চলেছে আমাদের সামনে দিয়ে। নানা দেশের সঙ্গীতের তালে মাঝে মাঝেই উপস্থিত দর্শক আন্দোলিত হচ্ছে।

আফ্রিকা থেকে আসা এক দলের বিশাল আফ্রিকান মুখোশ ও পেছনে আফ্রিকান গানের সঙ্গে নৃত্যরত মানুষের দল চলেছে।

প্রত্যেক দল উপস্থিত জনতার উদ্দ্যেশ্যে ছোট ছোট রঙিন কাগজের টুকরো  ‘Confetti’  ছুঁড়ে দিচ্ছে।

IMG_1129 IMG_1021 IMG_1064 IMG_1047

ফেব্রুয়ারির শীতের রাতে খোলা আকাশের নীচে নাচ, গান, আলোর নাচন, প্রচুর উৎসাহিত দর্শক – সব মিলিয়ে বেশ মজার ব্যাপার।

অনেক রাত হয়ে গেছে, এবার খেলা ভাঙ্গার খেলা। দর্শকেরা ধীরে ধীরে ফিরে চলেছে নিজ বাসস্থানে, নিজ গৃহে। বহুক্ষণ ধরে নৃত্যরত মুখোশধারীরা ক্লান্ত হয়ে খুলে ফেলছে নিজের মুখোশ, মুছে নিচ্ছে শীতের রাতে অধিক ক্লান্তির ঘাম।

IMG_1055 IMG_1014   IMG_1019 IMG_1023

এই উৎসবে প্রত্যেক মুখোশের আড়ালে অন্য মানুষ, অন্য পরিচয় – কোনো দিনও জানতে পারবো না এই মুখোশ ধারী মানুষদের আসল পরিচয়। শীতের রাতে আস্তানায় ফেরার জন্যে জোরে পা চালালাম, দূরে ভেসে আসছে খেলা ভাঙ্গার গান, এখনো কিছু দল প্যারেডের শেষ বৃত্তে।

About abakprithibi

I see skies of blue and clouds of white, The bright blessed day, the dark sacred night And I think to myself what a wonderful world...........
This entry was posted in Europe, France, Travel and tagged , , , , , , , , . Bookmark the permalink.

মন্তব্য করুন

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  পরিবর্তন )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  পরিবর্তন )

Connecting to %s