এবার Styrso দ্বীপ। এই দ্বীপ যেন আরও বেশি সুন্দর। সম্পূর্ণ দূষণ মুক্ত পরিষ্কার বাতাস, বুক ভরে শ্বাস নিয়ে হাঁটা, আর থেমে থেমে ফটো তোলা। দ্বীপে লোকজন দেখাই যায় না। মাছ ধরার ছোট বোট নিয়ে কেউ কেউ মাঝ সমুদ্রে মাছ ধরতে যায়। সেই ধরনের প্রচুর বোট ফেরিঘাটে বাধা। মৎস্য প্রেমিক কিরণের ইচ্ছে একদিন এই ধরণের কোন এক বোট নিয়ে মাঝসমুদ্রে মাছ ধরতে যাবে।
সেদিন Styrso দ্বীপের সমুদ্রের কিনারে বসে পোলাও আর আলুর দমে চার বঙ্গসন্তানের রসনা তৃপ্ত হল। উত্তর সাগরের বুক ছুঁয়ে আসা ঠাণ্ডা সামুদ্রিক হাওয়ায় ঠাণ্ডার কামড়, কিছুতেই হাত বের করা যাচ্ছে না।
কোন রকমে হাত বের করে খাওয়া সেরে নিয়েই হাঁটা শুরু হল দ্বীপে।
স্ক্যান্দানাভিয়া থেকেই ভাইকিং রা এক সময় সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছিল। পৃথিবীর নানা দিক থেকে নিয়ে এসেছিল ধন সম্পদ, দাস দাসী। পৃথিবী বদলে গেছে। ভাইকিং যুগ আর নেই। নেই সেই রোমাঞ্চ প্রিয়, এডভ্যাঞ্চার প্রিয় ভাইকিং রা। কিন্তু তাঁদের নিদর্শন আছে জাদুঘরে। ছেলেবেলায় শুকতারা পত্রিকায় অনিল ভৌমিকের লেখা ভাইকিং দের এডভ্যাঞ্চার পড়ে বড় হয়েছি। আজ সেই ভাইকিং দেশে এসে রোমাঞ্চিত হয়েছি বৈ কি।
পৃথিবীর রূপ দেখে দেখে আমরা ক্লান্ত হই না। মনের ক্যনভাসে কতো ছবি যে আঁকা হয়, ছবি যেমন মন ভরিয়ে দেয় তেমনি ভাস্করের ক্যামেরাও ভরে ওঠে নানা মুহূর্তের ছবিতে।
পরেরদিনে আমাদের গন্ত্যব্য উত্তরের দ্বীপ, নাম Ockero। Ockero গথেনবারগ উত্তর আরচিপিলাগোর মধ্যে প্রধান দ্বীপ। এই দ্বীপে বাস যায়। দোতালা বাসে সারা দ্বীপ ঘোরার পরিকল্পনা আমাদের। এই বাস সহ ফেরী করে সমুদ্র পার হয়ে পৌঁছে গেলাম সেই দ্বীপে। বাস, ছোট কার সমুদ্র পার হয় বিশাল ফেরী দিয়ে। একসঙ্গে প্রায় একশোটা কার আর দু’তিনটে বাস পার হয়ে যায় একবারে। Ockero বেশ বড় দ্বীপ, এই দ্বীপে অনেক ইন্ডাস্ট্রি এলাকা, বড় বাড়ী, বিল্ডিং ইত্যাদি আছে। একটা ছোট শহরের মতোই। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সঙ্গে সঙ্গে শহুরে জীবন ও সমান তালে আছে এই দ্বীপে। এই দ্বীপে যখন বাসে ঘুরছিলাম মনেই হয় নি কোন দ্বীপে ঘুরছি।
অনেক দিন ঘুরে নিয়েছি। এবার ফিরে চল নিজ নিকেতনে।