দিল্লীর যানজটে আটকে গিয়ে, ধোঁয়া, বায়ুদূষণ, পোড়া ডিজেল ও পেট্রোলের গন্ধ যুক্ত বাতাস ফুসফুসে ভরে নিয়ে যে যাত্রার শুরু হয়, সেই যাত্রা যে এক স্বপ্নের মুখোমুখি নিয়ে যেতে পারে – তা কিছুতেই কল্পনা করা যায় না।
এমনকি, আগ্রা স্টেশনে নামা মাত্রই আগ্রা ষ্টেশনকেও ভারতবর্ষের অন্য যে কোন ট্রেন ষ্টেশনের মতোই মনে হয়। বিশ্বাস করতে কষ্ট হয় – এখানেই পৃথিবীর আশ্চর্যতম স্থাপত্যের ঠিকানা।
সেই ট্যাক্সি ড্রাইভারদের হাঁকাহাঁকি, দর কষাকষি – টুরিস্ট দেখে একটু অন্যরকম দাম, বেশী দাম হাঁকা – সবই এক। অবশ্য এখন হাতের কাছে ওলা ট্যাক্সি ব্যপারটাকে অনেকটাই সহজ করে দিয়েছে।
যাইহোক, তাজমহলকে তো শুধু ছবিতেই দেখেছি, গল্প শুনেছি, শুনেছি পৃথিবীর যে কোন প্রান্তের ভ্রমণ পিয়াসী মানুষের ভ্রমণ তালিকার প্রথম পাতায় স্থান পায় তাজমহল। পৃথিবীর আশ্চর্য স্থাপত্যের তালিকায় আছে তাজ।
আর সেই শতাব্দী প্রাচীন বহু চর্চিত আশ্চর্য তাজকে নিজের চোখে দেখতে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ আগ্রায় আসে। আর সত্যিই তাজকে নিজের চোখে দেখে, তার বিশালতা, মহানতাকে মেনে নিতে হয়।
তাজের সদর দরজা দিয়ে ঢুকেই, সদর দরজার ফ্রেমে তাজকে প্রথম দেখা যায় – অপূর্ব। আর সেই প্রথম দেখাতেই, পৃথিবীর মানুষ তাজের প্রেমে পড়তে বাধ্য।
তারপর শুরু হয় আলোর মায়াজাল – ভোরের প্রথম আলো তাজকে ছুঁয়ে যায়, তাজের শ্বেত পাথরের গম্বুজ ও মিনার গুলো – হালকা এক সোনালি আভায় সেজে ওঠে। আরও কাছে যেতে যেতে – তাজমহলকে বেশ ছোট বলে মনে হয়, আবার দূরে গেলে বড় মনে হয় – সম্পূর্ণ আলোর খেলা, আলোর মায়াজাল।
পৃথিবীতে মানুষের ইতিহাসে বোধহয় রোম্যান্টিক প্রেমের নিদর্শন কাব্যে, ছবিতে, সাহিত্যে যতটা দেখা যায়, স্থাপত্যে তো দেখাই যায় না। বিশেষ করে স্থাপত্যের রূপে ব্যক্তিগত রোম্যান্টিক প্রেমের নিদর্শন বোধহয় আর নেই। সাধারণত, পৃথিবীতে যে মহান স্থাপত্য দেখা যায়, সেটা হয়তো কোন এক প্রতিষ্ঠানকে ঘিরে, বা ধর্মীয় স্থাপত্য, কিংবা রাজনৈতিক স্থাপত্য – কিন্তু ব্যক্তিগত প্রেমের উদ্দেশ্যে পৃথিবীর বুকে আর অন্য কোথাও এমন কোন স্থাপত্য তৈরি হয় নি।
তাজমহল – এ শুধু মুঘল ইতিহাসের এক অধ্যায় নয়, তাজমহল মানে মানব সভ্যতার উপস্থিতি ও স্থাপত্য শিল্প চেতনার এক অদ্ভুত প্রতীক।
খুব ভালো লাগলো।
Very nice reading about Tajmahal
thank you
ধন্যবাদ।