ইউরোপের গলি গুলোর মধ্যে এক অদ্ভুত রহস্যময়তা আছে। সে বৃষ্টি ভেজা ধূসর দিনেই হোক বা রোদ ঝলমলে উজ্জ্বল দিনের দুপুরে হোক কিংবা হলুদ আলোয় সাজানো মধ্য রাতেই হোক – আলো ছায়ার এক অদ্ভুত মায়াজালে সেই অতীতের দিনেই থমকে থাকে।
মানুষের জীবনে সময় যতই কম, যতই বহমান, চলমান হোক না কেন – ইউরোপের গলি পথ গুলো যেন সময়কে এক জায়গায় বেঁধে রাখতে জানে।
আর সেই ঐতিহাসিক রহস্যময়তার খোঁজে, থমকে যাওয়া সময়ের খোঁজে, অনেকেই ইউরোপের গলি পথ ধরে হাঁটতে ভালোবাসে। দুই পাশে, মধ্য যুগীয় বিল্ডিং, অতীত সময়ের জীবন ছবি, আর মাঝে চলে গেছে পাথরে বাঁধানো দীর্ঘ গলি পথ। ঐতিহাসিক দীর্ঘ সেই গলি গুলো যেন অচেনাকে জানার জন্যে হাতছানি দেয়।
যখন পথ চলতে চলতে, কোন এক গলির শেষ প্রান্তে এক মধ্য যুগীয় চার্চের চূড়া দেখি, কিংবা দেখি গলিটি এক সুন্দর স্থাপত্যের পাশে এসে, আলতো ভাবে বাঁক নিয়ে মুড়ে গেছে কোন এক অনিশ্চয়তার দিকে, অচেনার দিকে, অচেনা এক জনপদের দিকে – সেই গলিটি যেন আরও চলার প্রলোভন দেখায়।
হয়তো, সেই পথ ধরে আমার চলার কথা নয় – কিন্তু, শেষে কি আছে দেখতে বড়ই ইচ্ছে জাগে। কখনো সেই গলি পথ ধরে এগিয়ে যাই। জানতে ইচ্ছে করে গলিটি কোথায় গেছে?
কিন্তু, যে কোন এক নতুন দেশে এসে, এক অচেনা নতুন পথের এক প্রান্তে দাঁড়িয়ে মনে প্রশ্ন জাগে – এই পথ সত্যিই আমায় কোথায় নিয়ে যাবে?
পথ অনেকটা ঠিক নদীর মতো – বড় পথে এসে মেশে অনেক ছোট ছোট পথ, গলি – তারপর সেই পথ গিয়ে মেশে আরও আরও বড় পথে। আর সেই প্রতিটি গলির গায়ে জমতে থাকে গল্প, সময়ের গল্প, মানুষের গল্প, বেঁচে থাকার গল্প। আর সেই গলি পথ ধরে চলতে চলতে জীবনের ছবি আঁকা হয়ে যায়। তাই তো বার বার পথের গল্প বলি, পথের ছবি আঁকি। ভালো লাগে।