ছুটির দিনের দুপুরে বা বিকেলে এখানে তিল ধারণের জায়গা থাকে না – মানুষের ভিড় উপছে পরে। উৎসব নয়, অথচ উৎসবের মতো ভিড় – আন্তর্জাতিক ভিড়। তাছাড়া, যদি ইস্টারের ছুটির সঙ্গে উইক এন্ড জুড়ে গিয়ে এক লম্বা ছুটি হয়ে যায় – সাধারণত মানুষের ভিড় আরও বেড়ে যায়।
রোমের সবচেয়ে ব্যস্ততম রাস্তাটি, যা কিনা শুধু পথচারীদের জন্যেই তৈরি, সেই রাস্তাটি যেখানে গিয়ে চওড়া হয়ে, স্প্যানিশ স্টেপের নিচে, রোমের অন্যতম বিখ্যাত স্কোয়ার – ‘Piazza di Spagna’ র কাছে এসে থেমেছে, ঠিক সেখানেই আছে এক ফোয়ারা – Fontana della Barcaccia । যার আক্ষরিক মানে হল – Fountain of the Old Boat ।
এই ফোয়ারা নিয়ে স্থানীয় কিংবদন্তী প্রচলিত আছে – ষোল শতাব্দীতে, ক্রিসমাসের সময়ে, টাইবার নদীর বন্যায়, পুরো রোম ডুবে গিয়েছিল। সেই সময়ে শহরের ভেতরে বন্যার জল, এক ছোট নৌকোকে নিয়ে এসেছিল – ঠিক এই স্কোয়ারের মধ্যেই নদী নৌকোটিকে নিয়ে এসেছিল।
স্থানীয়রা বলে – নদীর জল যখন সরে গিয়েছিল, সেই নৌকোটি এই এই স্কোয়ারের মধ্যেই রয়ে গিয়েছিল। আর সেই টাইবার নদীর ভয়াবহ বন্যা ও মাঝ শহরে নৌকো রয়ে যাওয়ার ঘটনাই নাকি এই ফোয়ারার প্রেরণা ছিল। তাই এই ফোয়ারাটি দেখতেও অনেকটা – অর্ধেক ডুবে যাওয়া ছোট জাহাজের মতো।
ইউরোপের অন্যান্য ফোয়ারার থেকে একদম আলাদা, অন্যরকম গঠনের এই ফোয়ারা এই জায়গাকে এক সতেজ, সজল, তরতাজা এক অনুভুতি দেয়। ষোল শতাব্দীতে রোমের পোপ, রোমের প্রধান স্কোয়ার গুলোর মধ্যে ফোয়ারা স্থাপনের কথা বলেছিলেন। আর এই স্কোয়ারে, ফোয়ারা স্থাপনের ভার দেওয়া হয়েছিল সেই সময়ের ইতালির বিখ্যাত শিল্পী – Pietro Bernini কে।
কিন্তু, পরবর্তী কালে তার পুত্র Gian Lorenzo Bernini র সাহায্যে এই ফোয়ারার কাজ সম্পূর্ণ হয়েছিল। Gian Lorenzo Bernini কে সেই সময়ের অতি প্রতিভাবান শিল্পী বলা হয়েছিল – যার কাজ ইতালি ছাড়িয়ে ইউরোপের নানা জায়গায় প্রশংসা পেয়েছিল। তাই, এই ফোয়ারাকে ইউরোপ তথা ইতালির বিখ্যাত ভাস্কর্য ও স্থাপত্য শিল্পী Gian Lorenzo Bernini ও তার পিতার যুগ্ম মাস্টারপিস বলা যায়।
ষোল শতাব্দীর তৈরি সেই ফোয়ারা দীর্ঘ সময়ের পথ অতিক্রম করে আজও যে জল ঢেলে যেতে পারে, বহু টুরিস্ট ও স্থানীয়দের জন্যে দৃশ্য সৃষ্টি করে যেতে পারে – তার কৃতিত্ব কিন্তু রোম শহর কর্তৃপক্ষ দাবি করে। কারণ বার বার সংরক্ষণ করে পূর্ব রূপে ফিরিয়ে আনতে বহু অর্থ ও শ্রম খরচ হয়। কিছুদিন আগেই প্রায় দুই লাখ ইউরো দিয়ে এই প্রাচীন ফোয়ারাকে সংরক্ষণ করা হয়েছে।
রোমের ফোয়ারা গুলোর মধ্যে বোধহয় মানুষের বিশ্বাস জড়িয়ে আছে – ফোয়ারার মধ্যে কয়েন ছুঁড়ে দেওয়ার জন্যে ফোয়ারার একদম কাছে মানুষের ভিড় ও হুড়োহুড়ি লেগেই থাকে। এখানের এই ফোয়ারাতেও দেখি – কয়েন ছুঁড়ে দেওয়ার হিড়িক।
তাই তো এখানে, পৃথিবীর নানা কোণের মানুষ একে দেখতে আসে, মানুষের সমাবেশে অকারণেই এই জায়গা জমজমাট হয়ে ওঠে। ঠাসাঠাসি মানুষের ভিড়ে, পাশের মানুষের ভাষা বোঝা না গেলেও, উপস্থিত মানুষের মনের ভাষা গুলো কিন্তু একই – উৎসবের আমেজ, ছুটির মেজাজ ধরে রাখার আহ্বান।
Sanchita,
Read the story of Ship of Portugal. Very interesting. But I am very curious
from where you collect this story/history.
with love
bhom mama
Thank you. Actually whenever we visit a tourist spot, I collect the tourist brochure of that place which generally describes all the details and also encourages to know/read more about that place.
regds
SC