বার্সিলোনা শহরের কেন্দ্র থেকে, প্রধান রাজপথ La Rambla, ধরে হাঁটতে শুরু করলে, পথটি সমুদ্রের কাছাকাছি এক প্রশস্ত স্কোয়ারে নিয়ে আসে।
আর, সেই চলার পথে, দূর থেকেই স্কোয়ারের মধ্যমণি, আকাশছোঁয়া উঁচু স্তম্ভটিকে দেখা যায়। স্তম্ভটির একদম উপরে দেখা যায়, দূর সমুদ্রের দিকে মুখ করে, সমুদ্রের দিকে আঙুল দেখিয়ে কলোম্বাসের স্ট্যাচুটি দাঁড়িয়ে আছে। কলম্বাস স্তম্ভটিকে বার্সিলোনা শহরের প্রতীকও বলা যায়।
ক্রিস্টোফার কলম্বাসের প্রথম আমেরিকা অভিযানকে সম্মান জানাতে ও আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীর জন্যে ১৮৮৮তে, বার্সিলোনার Plaça de la Porta de Pau স্কোয়ারের কেন্দ্রে, এই কলম্বাস স্তম্ভটি স্থাপিত হয়েছিল। স্থানীয়দের মত অনুসারে, কলম্বাস আমেরিকা আবিষ্কারের পরে ঠিক এখানেই এসেছিলেন এবং রানী Isabella I ও রাজা Ferdinand V কে আমেরিকা আবিষ্কারের খবর দিয়েছিলেন।
কলম্বাস জন্ম সূত্রে ইতালির। বার্সিলোনা কিংবা স্পেনের সঙ্গে কলম্বাসের যোগসূত্র যদিও ঐতিহাসিক গবেষণা সাপেক্ষ, কিন্তু, স্পেনের মানুষ কলম্বাসকে নিজের দেশের মানুষ বলেই ভাবে। ওরা জানে – স্পেনের বিখ্যাত অভিযাত্রীর নাম ‘ক্রিস্টোফার কলম্বাস’।
এই স্তম্ভটির পাদদেশ থেকে লিফট নিয়ে একদম চূড়ায়, কলম্বাস স্ট্যাচুর একদম কাছাকাছি পৌঁছে যাওয়া যায়। আকাশছোঁয়া এই স্তম্ভটির নিচে পৌঁছে বোঝা যায় – ঠিক কতটা উঁচু হতে পারে।
এই স্তম্ভটির নিচে যারাই যায় – তাঁদের মনে একটাই প্রশ্ন থাকে। কলম্বাসের আঙুল, ঠিক কোন দিকে নির্দেশ করছে, তার জন্ম শহর Genoa র দিকে? নাকি তিনি যে নতুন এক পৃথিবী – আমেরিকা, আবিষ্কার করেছেন, তার দিকে? প্রশ্ন ও উত্তর যাই হোক না কেন, কলম্বাস যে দিকেই নির্দেশ করুক না কেন, এই উঁচু স্তম্ভটির উপরের কলম্বাস স্ট্যাচু যেন দূর সমুদ্রের দিকে হাত দেখিয়ে, সমুদ্র অভিযানের, কিংবা এক নতুন মহাদেশ আবিষ্কারের, বা ঘরছাড়ার, অথবা শুধুই ভ্রমণের প্রলোভন দেখায়।