দিনের রং উজ্জ্বল সোনালি হোক, বা মন খারাপের দিন হোক, কিংবা মেঘলা ধূসর দিন, বৃষ্টির দিন, তুষার পাতের দিন হোক – যাই হোক না কেন, ইউরোপের মানুষ শপিং করতে ভালোবাসে। তাই ইউরোপের যে কোন বড় শহরে এক বড় রাস্তা থাকে যে রাস্তার দুই পাশে শুধুই শপিংয়ের ব্যস্ততা দেখা যায়।
অবশ্য শুধু ইউরোপ কেন, পৃথিবীর যে কোন শহরের মানুষের জীবনেই শপিংয়ের এক গুরুত্বপূর্ণ জায়গা আছে। শপিং নাকি মানুষকে এক ধরণের তৃপ্তি দেয়, বেঁচে থাকায় অ্যাডভেঞ্চার যোগ করে। শপিং নাকি মানুষের সুখ হরমোনকে জাগ্রত করে, কোন জিনিস নিজের অধিকারে নিয়ে আসার মধ্যে নাকি এক অদ্ভুত তৃপ্তি কাজ করে, শপিং এর সঙ্গে সুখের নাকি সুক্ষ এক যোগাযোগ আছে – তাই বোধহয় ইউরোপে যে কোন বয়সের মানুষকেই শপিং করতে দেখি, সে উইন্ডো শপিং হোক বা দৈনন্দিন জিনিসের শপিং হোক, দেখেছি নানা বয়সের ইউরোপিয়ানরা এই কাজটি খুবই মনোযোগ দিয়ে করে। তাই তো মনে হয় ইউরোপে বহু ইজমের জন্মের পরে, আরেক ইজমের জন্ম হয়েছে – কনজুমারিজম।
সে যাইহোক – ইউরোপের বেশীর ভাগ মানুষের জীবন ধারণের সাধারণ নিয়ম অনুসারে বার্সিলোনার মানুষও শপিং করতে খুব ভালোবাসে। তাই, বার্সিলোনা শহরকে শপিং প্রেমীদের স্বর্গরাজ্য কিংবা শপিং শহর বললেও খুব একটা ভুল বলা হবে না।
তাই, বার্সিলোনার শহর কেন্দ্রের বড় রাস্তা Portal de l’Àngel এর দুই পাশে, ইউরোপের বড় ব্র্যান্ডের শো রুম সাজানো। আর, বার্সিলোনার এই শপিং এলাকায় সারা বছরই প্রায় টুরিস্ট ও শপিং প্রেমীদের ভিড় লেগে থাকে। বিশাল এই রাস্তা শুধুমাত্র পথচারীদের জন্যে। বার্সিলোনার সবচেয়ে দামী জায়গার মধ্যে অন্যতম এই রাস্তা।
এই শপিং স্ট্রীটে এলে শুধু যে শপিং করতেই হবে – তা কিন্তু নয়, সামারের উজ্জ্বল দিনে গাছের ছায়ার নীচে, ছোট্ট সাজানো কফি শপে বসে কাপে চুমুক দিতে দিতে মানুষ ও এদের শপিং যজ্ঞের ছবি দেখাও উদ্দেশ্য হতে পারে। এখানে বসে, শপিং ও মানুষের সুখের যোগাযোগটি ঠিক কেমন হতে পারে তার ছোঁয়াচ পাওয়া যায়, এই রাস্তার স্থানীয় ছন্দটি বোঝা যায়। তাই, আমরাও বার্সিলোনার এই শপিং স্ট্রীটে এসে আমাদের ভ্রমণ স্মৃতির শপিংটাও তাড়াতাড়ি সেরে নিই – এই যে এলাম, দেখলাম – এও তো এক ধরণের শপিং, তাই না – সময় শপিং, স্মৃতি শপিং!