বার্সিলোনার এই রাজপথকে পৃথিবীর সবচেয়ে দামী ও নামী রাজপথের মধ্যে অন্যতম রাজপথ বলা হয়, এবং স্পেনের মধ্যে তো সবচেয়ে দামী রাজপথ বলেই গণ্য করা হয়।
আর এই রাজপথের সেই ঐশ্বর্যশীলতার প্রমান দিতেই যেন, এই বিশাল রাস্তার দু’পাশের ল্যাম্প পোস্ট থেকে শুরু করে, ফোয়ারা, বসার জায়গা, স্ট্যাচু, স্থাপত্য, এমনকি রাস্তার পাশে পৃথিবীর যাবতীয় নামী দামী ব্র্যান্ডের শো রুমের দেওয়ালের ঝাড়বাতি গুলোও অতি যত্ন করে ডিজাইন করা হয়েছে – এই রাস্তার প্রতিটি পদে যেন স্প্যানিশ আভিজাত্য ও রুচির ছোঁয়া দেখা যায়।
তাছাড়া, বার্সিলোনার এই প্রধান বুলেভার্ডের প্রতিটি স্থাপত্য প্রাচীন, মধ্যযুগীয় ও আধুনিক ইউরোপিয়ান স্থাপত্যের নিদর্শন বহন করে। বার্সিলোনার বিখ্যাত আর্কিটেক্ট Antoni Gaudí র দুই মহান সৃষ্টির ঠিকানাও এই রাজপথ – তাই এই শহরে পা রাখলে এই রাজপথে একবার আসতেই হয়।
উদ্দেশ্য যদিও হয় Antoni Gaudí র ডিজাইনে তৈরি বিখ্যাত স্থাপত্য দেখা, কিন্তু, এই রাজপথের বিশালতা, উদারতা, ডিজাইন, সবুজ সৌন্দর্য ও উৎসবমুখরতা যেন কাউকেই নিরাশ করে না। আর যারা শপিংকে ভ্রমণের তালিকায় রাখে, তাদের জন্যে তো এই রাস্তাকে শপিং এর স্বর্গরাজ্য বলা যায়। অবশ্য উইন্ডো শপিং এর জন্যেও এই রাস্তার পাশের শো রুম গুলোর অভিনবত্ব চোখে পড়তে বাধ্য। আর এই সব কিছুকে দুই পাশে নিয়ে, পৃথিবীর নানা কোন থেকে আসা মানুষের সঙ্গে এই রাজপথ ধরে হাঁটতে হাঁটতে এক অদ্ভুত আধুনিক ও ক্লাসিক পরিবেশের মুখোমুখি হতে হয় – যে পরিবেশের ছোঁয়াচ মনে লেগে থাকে।
আর দিনের রং উজ্জ্বল সোনালি হলে, হাওয়ার একটু উষ্ণতা থাকলেও ক্ষতি নেই – রাস্তার দু’ধারের গাছের ছায়ায় সাজানো ডিজাইনার বসার জায়গায় বসে একটু জিরিয়েও নেওয়া যায়, কিংবা পথের ধারের খোলা রেস্টুরেন্টে বসে তাপাস খেতে খেতে নানা ধরণের মানুষ ও তাদের ব্যস্ততা, চলাফেরা দেখতে দেখতেও সময় কাটানো যায়।
আর সেই কাটিয়ে দেওয়া সময়, কিংবা সেই রাজপথ ধরে হেঁটে যাওয়ার মুহূর্ত গুলোই পরবর্তী কালে, সেই পদক্ষেপ গুলোর এক উজ্জ্বল ছবি তৈরি করে – যে ছবি গিয়ে মস্তিকের লক্ষ কোটি কোষের মধ্যে কোন এক কোষে গিয়ে জমা হয় – স্মৃতি হয়ে। আর এই ভাবে চলমান সময়ের একের পর এক উজ্জ্বল ছবি তৈরি করে যাওয়ার নামই বোধহয় জীবন।