ইউরোপের শহরের ছোট্ট ট্রেন গুলো (The Little Tourist Trains of Europe)

যে কোন বয়সের টুরিস্টদের জন্যে ইউরোপের শহর গুলো যেন সদা প্রস্তুত থাকে। ইউরোপের যে কোন ঐতিহাসিক শহরের নানান জায়গা গুলো দেখে নিতে নিতে, কিংবা প্যারিসের পাহাড়ি পথে চলতে চলতে পা দু’টো যদি ক্লান্ত হয়ে যায়, ক্ষতি নেই, কবল্ট পাথরে বাঁধানো রাস্তা দিয়ে নিয়মিত চলন্ত ঐ ছোট্ট ট্রেন গুলোয় চেপে পড়লেই হল।

ইউরোপের শহরের ট্র্যাফিকের উপরে নির্ভর করে দশ বা পনেরো কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা বেগে চলা ঐ ট্রেনে চেপে অতি অনায়াসে শহর দেখে নেওয়া যায় – আবার যেখানে খুশী নেমেও যাওয়া যায় – তাই মনে হয়, বয়স্ক থেকে শুরু করে শিশু – সবার কাছেই ঐ ছোট্ট ট্রেন খুব প্রিয়।

শুধু কি শহরের ভেতরে? প্যারিসের ভারসেই প্রাসাদের বিশাল বাগানে শীতের শেষ বিকেলের নরম আলোয় দিগ্‌ভ্রান্ত হয়ে গেলে, ঐ ছোট্ট ট্রেন এসেই পথ দেখিয়ে নিয়ে যায়। তারপর, ভিয়েনার Schönbrunn  প্রাসাদের বিশাল সেই বিশাল বাগান – যার আয়তন দেড়শ হেক্টরেরও উপরে, সেখানে ঐ ছোট্ট, ডিজেল চালিত প্যানোরামা ট্রেনই বহু টুরিস্টের বন্ধু।

ইউরোপের বহু শহরে দেখেছি ঐ ছোট্ট ট্রেন গুলোয় হাসিমুখে বসে থাকা টুরিস্ট – বিশেষ করে জাপানি টুরিস্ট ও গর্বিত ট্রেন চালক ঐ শহরের এক খুশির ছবি তৈরি করে। যেমন, পর্তো শহরের সেই ছোট্ট ট্রেনে চাপার জন্যে সেই ছোট্ট ছেলেটির বায়না, বয়স্ক মানুষের হাসি মুখে বসে শহর দেখা – সবই যেন ছুটির ছবির এক অঙ্গ হয়ে যায়।

ইউরোপের প্রতিটি শহরের এমনি এক ছোট্ট ট্রেন থাকে। তুলুসেরও আছে, তুলুসের শহর কেন্দ্রের মধ্য দিয়ে যখন ঐ ছোট্ট ট্রেনটি টুরিস্টদের নিয়ে শহরে দেখাতে দেখাতে চলে, অনেক সময়েই দেখেছি রাস্তার পাশের খোলা রেস্টুরেন্টে বসে কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে ফরাসী বয়স্করা ঐ ছোট্ট ট্রেনের টুরিস্টদের উদ্দেশ্যে হাত নাড়ে – ফরাসীরা মনে হয়, নিজেদের চরিত্রে, বেঁচে থাকায়, জীবন যাপনে হালকা, মার্জিত এক কৌতুক বোধ মিশিয়ে নিয়েছে – হয়তো, এতে বেঁচে থাকাটা একটু সহজ হয়, সহিষ্ণুতা বাড়ে।

অজানা's avatar

About abakprithibi

I see skies of blue and clouds of white, The bright blessed day, the dark sacred night And I think to myself what a wonderful world...........
This entry was posted in Europe, Travel and tagged , , , . Bookmark the permalink.

এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান