ঐতিহাসিক দুব্রভনিক শহরের রাজপথটি যেখানে গিয়ে শেষ হয়ে, লুযা (Luža) স্কোয়ারের দিকে, ক্যাথিড্রাল ঘেঁসে বেঁকে গেছে – ঠিক সেখানেই দেখা যায় দুভ্রভনিক শহরের অলংকার Sponza Palace কিংবা Divona । এই প্রাসাদের নামের মধ্যেই যেন লুকিয়ে আছে এর প্রাচীন ইতিহাসের গল্প – ল্যাটিন শব্দ ‘spongia’ থেকে এই প্রাসাদের নামকরণ হয়েছিল Sponza Palace ।
অতীতে, এই জায়গায় দুব্রভনিক শহরের সমস্ত বাড়ীর ছাদ থেকে বৃষ্টির জল সংগ্রহ করে জমা রাখার বন্দোবস্ত ছিল। তারপর, এই শহরের ইতিহাসের দীর্ঘ সময়ের পথে, এই প্রাসাদের ভূমিকা বদলেছে, বার বার বদলেছে – কখনো কাস্টমের গুদাম ঘর, কখনো অস্ত্রাগার, কখনো কোষাগার, কখনো বা ব্যাংক, কিংবা ব্যবসা বানিজ্য কেন্দ্র, আবার কখনো স্কুল। তাছাড়া, ক্রোয়েশিয়ার গৌরবময় Ragusa প্রজাতন্ত্রের যুগে এই প্রাসাদ জাতীয় সংস্কৃতির এক মুখ্য কেন্দ্র তো ছিলই।
ষোল শতাব্দীতে তৈরি দুভ্রভনিক শহরের এই অন্যতম সুন্দর চতুর্ভুজ আকারের প্রাচীন প্রাসাদের গঠনশৈলীতে গথিক ও রেনেসাঁ স্টাইলের সংমিশ্রণ দেখা যায় – যা কিনা, ষোল শতাব্দীর দুভ্রভনিক শহরের রক্ষণশীল ও গৌরবময় Ragusa প্রজাতন্ত্রের এক প্রতীক ছিল।
দুভ্রভনিক শহরের এই প্রাসাদকে আরও বেশী গুরুত্ব দেওয়ার অন্যতম কারণ হল – সতেরো শতাব্দীতে ক্রোয়েশিয়ার ভয়ানক ভূমিকম্প যা অনেক স্থাপত্যকে ধুলিস্যাত করে দিয়েছিল, সেই ভূমিকম্পেও এই Sponza Palace এর কোন ক্ষতিই হয় নি। আর সম্ভবত, সেই কারনেই দুভ্রভনিক রিপাবলিক রক্ষা পেয়েছিল।
বর্তমানে, এই প্রাসাদ দুভ্রভনিক শহরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র বলা যায়। দুভ্রভনিক শহরের সমস্ত প্রাচীন নথিপত্র, প্রাচীন পুঁথির ঠিকানা এই প্রাসাদ। এখানে দুভ্রভনিক শহরের প্রাচীন নথিপত্র খুবই যত্ন সহকারে সংরক্ষণ করা হয়। এখানে সংরক্ষিত নথিপত্রের তারিখ বারো শতাব্দীরও আগের, সবচেয়ে প্রাচীন নথিপত্রটি এগারো শতাব্দীর।
দুভ্রভনিকের সামার ফেস্টিভ্যালের সময়ে এই প্রাসাদের এক অদ্ভুত ভূমিকা থাকে। প্রতিবছর, এই প্রাসাদ প্রাঙ্গণ থেকে মহা সমারোহে, আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রচুর মানুষের উপস্থিতিতে দুভ্রভনিক সামার ফেস্টিভ্যাল শুরু হয়।