মহাবিশ্বের রহস্যের সমাধান যার সমীকরণে (চার) – আলবার্ট আইনস্টাইন (Albert Einstein)

চার

Sun

বিংশ শতাব্দীর শুরুতে ফিজিক্সের এক নতুন শাখার জন্ম হয়েছিল – কোয়ান্টাম ফিজিক্স। আর সেই কোয়ান্টাম ফিজিক্সে গ্রাভিটিকে সঠিক ভাবে ব্যাখ্যা করা ছিল – এক চ্যালেঞ্জ।

গভীর সেই সমস্যার সমাধানের খোঁজে আবার তিনি থট এক্সপেরিমেন্টের সাহায্য নিয়েছিলেন।

তিনি বললেন – কোন বস্তু যখন স্পেসে থাকে স্পেসকে একটু মুচড়ে দেয়, কার্ভ সৃষ্টি করে। আর স্পেসের সেই কার্ভই সেই অদৃশ্য শক্তি – গ্রাভিটির উৎস।

আইনস্টাইন স্পেশাল রিলেটিভিটি থিয়োরিতে গ্রাভিটিকে যোগ করে, তৎকালীন ইউরোপিয়ান বিজ্ঞান সমাজকে – general theory of relativity  র এক প্রাথমিক ধারণা দিলেন।

আধুনিক বিজ্ঞানের জন্ম – কিন্তু, সেই সময় তাঁর থিয়োরি এতোই জটিল, এতোই কঠিন ছিল, যে, তৎকালীন অনেক বিজ্ঞানী কিছুতেই মেনে নিতে পারেন নি। প্রমান চাই, বিজ্ঞান প্রমান চায়, কিন্তু, এই অদ্ভুত থিয়োরির প্রমান কি করে হবে? সেই সময় তাঁর থিয়োরিকে অনেকে বলেছিল – এ বিজ্ঞান নয়, কল্পবিজ্ঞান।

এমনকি, নোবেল কমিটি তিন তিন বার আইনস্টাইনকে নোবেল প্রাইজ দিতে প্রত্যাখ্যান করেছিল – কারণ, সেই সময়ে কোন বিজ্ঞানীই তাঁর থিয়োরি অফ রিলেটিভিটিকে যুক্তি দিয়ে মেনে নিতে পারছিল না। অবশেষে নোবেল কমিটি, আইনস্টাইনকে নোবেল প্রাইজ দিয়েছিল – কিন্তু, থিয়োরি অফ রিলেটিভিটির জন্যে নয়, ফোটো ইলেকট্রিক এফেক্টের জন্যে।

যাইহোক, সময় এদিকে এগিয়ে চলেছে, আইনস্টাইন বার্ন ইউনিভার্সিটি থেকে ডক্টরেট শেষ করে ফেলেছেন। তারপর, জেনেভা ইউনিভার্সিটি তাকে প্রথম honorary doctor দিয়েছিল, ততদিনে তিনি প্যাটেন্ট অফিস ছেড়ে জুরিখ ইউনিভার্সিটিতে এসোসিয়েট প্রোফেসর হিসাবে যোগ দিয়েছিলেন – সম্পূর্ণ গবেষণার কাজে নিমগ্ন হয়ে গেলেন।

তারপর, এদিকে, জেনারেল থিয়োরি অফ রিলেটিভিটির সমস্যাকে নিখুঁত ভাবে সমাধান করতে মাঝে চলে গেছে চার চারটে কঠিন বছর। তাঁর অদ্ভুত থিয়োরিকে কেউই মেনে নেবে না – যতক্ষণ না তিনি তাঁর থিয়োরির নিখুঁত প্রমান দিতে পারেন। আইনস্টাইন জানতেন – তাঁর থিয়োরি সম্পূর্ণ সঠিক, নির্ভুল, কিন্তু, প্রমান দিতে হবে।

হঠাৎ এক চিন্তা তাকে ছুঁয়ে গেল – যদি এক আলো রশ্মি এক বাঁকানো স্পেসে (curved space) ফেলা হয়, তাহলে, তাঁর থিয়োরি অনুযায়ী সেই আলোক রশ্মি বেঁকে যাবে। কারণ, লাইট সর্বদাই সরলরেখায় চলে, সেই নিয়ম অনুযায়ী স্পেসই কার্ভ তৈরি করেছে। কিন্তু, প্রকৃতির কোন বস্তু স্পেসকে যথেষ্ট মুচড়ে দেয় – যথেষ্ট গ্রাভিটি তৈরি করবে, যেখানে আলোর বেঁকে যাওয়া স্পষ্ট ভাবে বোঝা যাবে, দেখা যাবে?

উত্তর একটাই – সূর্য।

তিনি বললেন, মহাকাশে দূর নক্ষত্রের আলো সূর্যের পাশ দিয়ে যখন পৃথিবীতে আসে – সূর্যের গ্রাভিট্যাশনাল ফিল্ডের কাছে এসে একটু বেঁকে গিয়ে পৃথিবীতে আসে – কারণ সূর্যের কাছে স্পেস বেঁকে যায়। টানটান করে মেলে দেওয়া ইলাস্টিক চাদরে কোন ভারী বস্তু থাকলে যেমন করে চাদরটি মুচড়ে যায়, সূর্য স্পেসকেও ঠিক তেমনি করে মুচড়ে দেয়, বাঁকিয়ে দেয়।

আয়তনে পৃথিবীর চেয়ে তিনশো হাজার গুণ বড় সূর্যই আইনস্টাইনের জেনারেল থিয়োরি অফ রিলেটিভিটি প্রমান করতে পারে – কিন্তু, কি ভাবে সূর্যের পাশ দিয়ে আলোক রশ্মি ফেলা যাবে – যার নিজেরই এতো উজ্জ্বল আলো!

চলবে

অজানা's avatar

About abakprithibi

I see skies of blue and clouds of white, The bright blessed day, the dark sacred night And I think to myself what a wonderful world...........
This entry was posted in Inspirational and tagged , , , . Bookmark the permalink.

2 Responses to মহাবিশ্বের রহস্যের সমাধান যার সমীকরণে (চার) – আলবার্ট আইনস্টাইন (Albert Einstein)

  1. MD's avatar MD বলেছেন:

    Knowing about the very beginning of the journey of Gravitional Waves, in an uncomplicated language is indeed a joy! Thanks… Keep up the good work!

এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান