তথাকথিত ইউরোপিয়ান বিজ্ঞান দুনিয়ার সম্পূর্ণ অপরিচিত এক নাম, সে লিখছে – আলো মানে কণিকা, স্পেস ও টাইম বলে আলাদা কিছু হয় না – দু’টো আসলে এক – স্পেস ও টাইমের এক চাদর মানে স্পেসটাইম।
তৎকালীন বিজ্ঞান সমাজের বিজ্ঞানীরা প্রথমে তার কথা কিছুতেই মেনে নিতে পারেন নি – তাঁদের কাছে অদ্ভুত লাগছিল। তাই তার সেই পেপার গুলো কয়েক মাস এক পাশে সরানো ছিল।
প্রায় তিন চার মাস পরে, আইনস্টাইনের পেপার গুলো ম্যাক্স প্ল্যাঙ্কের চোখে পড়ে – সেই সময়ে একমাত্র তিনিই আইনস্টাইনকে সম্পূর্ণ বুঝতে পেরেছিলেন। ফিজিক্স দুনিয়ার সম্পূর্ণ অপরিচিত এক ব্যক্তির সেই পেপার গুলো একবার পড়েই ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক বুঝে গিয়েছিলেন – ঐ পেপার গুলো বিজ্ঞানের ইতিহাস বদলানোর ক্ষমতা রাখে। ১৯০৫ এর এডিশনে ঐ চারটে পেপার ছাপানো হল।
১৯০৫ সালটাকে বিজ্ঞানের ইতিহাসে, শুধু বিজ্ঞানের ইতিহাস নয় – আইনস্টাইনের জীবনের এক miracle year বলা হয়, আর আজও বিজ্ঞানীদের কাছে, Annalen der Physik এর ঐ সংখ্যাটির ঐতিহাসিক মূল্য অপরিসীম।
আইনস্টাইনের লেখা সেই চারটে পেপার আধুনিক ফিজিক্সের ভিত্তি স্থাপন করেছিল – স্পেস, টাইম, মাস, এনার্জির নতুন সংজ্ঞা দিয়ে, বিজ্ঞানকে এক সম্পূর্ণ নতুন খাতে বইয়ে দিয়েছিল।
অথচ, বিজ্ঞানের ইতিহাসে যে বছরটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল, সেই সময়ে আইনস্টাইন আক্ষরিক অর্থে কিন্তু বৈজ্ঞানিক ছিলেন না।
তারপর, ১৯০৭ এ আইনস্টাইন তাঁর স্পেশাল থিয়োরি অফ রিলেটিভিটিকে আরও গভীর ভাবে ব্যাখ্যা করার জন্যে নতুন পেপার লিখতে শুরু করলেন –
তিনি দেখলেন, তাঁর থিয়োরি অফ রিলেটিভিটি বিশেষ এক ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য – যখন কোন বস্তু একই গতিতে চলে, কিন্তু, প্রকৃতিতে তো আসলে তা হয় না, এক ত্বরণ থাকে, প্রতিটি বস্তুই ত্বরিত হয় – তাই, আইনস্টাইন তাঁর থিয়োরিকে আবার নতুন ভাবে সাজাতে শুরু করলেন – বাস্তবিকতাকে যে থিয়োরি ব্যখ্যা করবে। তিনি চেয়েছিলেন, তার থিয়োরি মহাবিশ্বের সমস্ত নিয়মকে ব্যাখ্যা করবে।
তাই তিনি আবার নতুন করে ভাবতে বসলেন – প্রকৃতিতে এক অদৃশ্য শক্তি আছে, যা কিনা সমস্ত কিছুকে এক জায়গায় ধরে রেখেছে – gravity, গ্রাভিটি প্রতিটি বস্তুকে ধরে রাখে, সূর্যের চারিদিকে গ্রহ গুলোকে ধরে রাখে গ্রাভিটি।
তাই, তিনি তার থিয়োরি অফ রিলেটিভিটিকে প্রকৃতির সমস্ত নিয়মের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করে এক সম্পূর্ণ theory দিতে চেয়েছিলেন। তাঁর সেই সমীকরণ শুধু টাইমকে ব্যাখ্যা করবে তা নয় – গ্রাভিটিকেও ব্যাখ্যা করবে। কিন্তু, তিনি বুঝেছিলেন প্রায় আড়াইশো বছরের বিজ্ঞানের ভিত্তিকে, বিশ্বাসকে তিনি নাড়া দিতে চলেছেন।
আইনস্টাইনের বিজ্ঞান চিন্তার নায়ক ছিলেন স্যার আইজ্যাক নিউটন – আইনস্টাইনের সময়ে নিউটন ছিলেন আধুনিক বিজ্ঞানের শেষ কথা। কোন বস্তু যখন নীচে পড়ে, এক রহস্যময় শক্তি তাকে নীচের দিকেই টানে – নিউটন গ্রাভিটিকে প্রথম ব্যাখ্যা করেছিলেন কিন্তু, গ্রাভিটি কি ভাবে কাজ করে – তা নিউটন ব্যাখ্যা করতে পারেন নি – সেখানে একটা রহস্য, একটা প্রশ্ন রয়েই গিয়েছিল।
নিউটন গ্রাভিটির যা ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন, আইনস্টাইনের মনে হয়েছিল সেই ব্যাখ্যা সম্পূর্ণ সঠিক নয় – তিনি এই মহাবিশ্বের রহস্যকে আরও গভীর ভাবে জানতে চেয়েছিলেন। কিন্তু, বিশাল সেই সমস্যার সমাধান খোঁজা সহজ ছিল না। বিশাল সেই কাজের শুরু কোথায়?
চলবে
Darun interesting and informative…. poroborti ongsher opekhaye roilam.
dhonybad.