প্যারিসের পথে পথে – দশ (The University of Paris, France)

প্যারিসের পথে, Rue Saint-Jacques ধরে হেঁটে যাওয়ার সময় চোখে পড়ে প্যারিসের প্রাচীন ইউনিভার্সিটি –  L’Université de Paris  বা প্যারিস ইউনিভার্সিটি, এর আবার আরেকটি প্রচলিত ডাকনামও আছে –  ‘Sorbonne’ । প্যারিসে এই নামেই এই ইউনিভার্সিটি বেশী প্রচলিত।

পৃথিবীর প্রাচীন ইউনিভার্সিটি গুলোর তালিকায় প্যারিসের এই প্রাচীন ইউনিভার্সিটির নাম খুঁজলে, নাম পাওয়া যাবে না – অথচ, পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের তালিকায় প্যারিস ইউনিভার্সিটির নাম অনায়াসে জায়গা পেত।

বারো শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে স্থাপিত এই ইউনিভার্সিটির প্রচার ও নাম সেই সময়ে সারা ইউরোপে ছড়িয়ে পড়েছিল। কিন্তু, ফরাসী বিপ্লবের উত্তাল আলোড়নের সময় এই ইউনিভার্সিটি প্রায় একশো বছর ধরে বন্ধ ছিল। তাই, প্রাচীন ইউনিভার্সিটির তালিকায় প্যারিস ইউনিভার্সিটি স্থান পায় নি। তবে, যখন আবার নতুন করে চালু হল, ধীরে ধীরে নাম ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছিল। তারপর, যখন দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের সময় হিটলারের নাৎসি বাহিনী প্যারিস আক্রমণ করল, এই ইউনিভার্সিটি আবার বন্ধ হয়ে গেল।

তারপর দুই দুইটি বিশ্ব যুদ্ধের শেষে ইউরোপে উচ্চশিক্ষার প্রতি মানুষের উৎসাহ বাড়তে শুরু হল – প্যারিসের এই ইউনিভার্সিটির বেশ কয়েকটা শাখা তৈরি হল। প্যারিস শহরের গত কয়েকশো বছরের ইতিহাসে এই ইউনিভার্সিটির প্রচুর অবদান লক্ষ্য করা যায়।

শুধু যে উচ্চ শিক্ষা দানেই এই ইউনিভার্সিটি সীমাবদ্ধ ছিল, তা নয় – প্যারিসের নানান সময়ের রাজনৈতিক, সামাজিক প্রতিবাদে কিংবা পরিবর্তনে এই প্রতিষ্ঠানের যথেষ্ট ভূমিকা ছিল। সে ফ্রান্সের ছাত্র আন্দোলনের সূচনাই হোক বা রাজনৈতিক পালাবদলের আন্দোলন হোক – সুত্রপাত কিন্তু এই জায়গা থেকেই হয়েছিল।

প্যারিসের এই পথে ছাত্র ছাত্রীর ভিড়ে মিশে হাঁটতে হাঁটতে Sorbonne ইউনিভার্সিটির সামনের কফি শপের সামনে এসে একটু থেমে যেতে হয় বৈ কি। এই জায়গাটায় প্যারিসের স্পন্দন অনুভব করা যায়। এখানে বসে, কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে নানা রঙের ভিড়ের দিকে চোখ রেখে একঝাক মানুষ দেখার মধ্যেও এক ধরণের সুক্ষ আনন্দ লুকিয়ে আছে – আর সেটাই প্যারিসের পথের বিশেষত্ব।

প্যারিসের পথে পথে – নয়

About abakprithibi

I see skies of blue and clouds of white, The bright blessed day, the dark sacred night And I think to myself what a wonderful world...........
This entry was posted in Europe, France, Travel, Western-Europe and tagged , , , , . Bookmark the permalink.

মন্তব্য করুন

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  পরিবর্তন )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  পরিবর্তন )

Connecting to %s