সাধারণত ইউরোপে এতো পাশাপাশি দুই চার্চের উপস্থিতি দেখা যায় না – কিন্তু, পোর্তো শহর কেন্দ্রে অবস্থিত, সম্পূর্ণ দুই ধরণের চার্চ এই শহরের এক বিশেষ টুরিস্ট আকর্ষণ – পাশাপাশি দুই ভিন্ন শতাব্দীর, দুই ভিন্ন স্থাপত্য শিল্পের অধিকারী এই দুই চার্চ তাই স্বভাবতই টুরিস্টদের অবাক করে।
এক পাশে আঠারো শতাব্দীর চার্চ ‘Igreja do Carmo’ ও আরেক পাশে সতেরো শতাব্দীর নিদর্শন ‘Igreja dos Carmelitas Descalços’ চার্চ – আর মাঝে এক ছোট্ট ঘর ঐ দুই চার্চকে আলাদা করেছে। আসলে ঐ ছোট্ট ঘর শুধুই দুই চার্চের মঙ্ক ও নানদের আলাদা করার জন্যে তৈরি হয়েছিল।
পুরনো আমলের এই দুই চার্চ নিয়ে পোর্তো বাসীদের মধ্যে অনেক রহস্যময় গল্পগাঁথা প্রচলিত আছে। বাঁদিকের চার্চটি প্রাচীন বারোক স্থাপত্যশিল্পের অপূর্ব নিদর্শন। ডানদিকের চার্চটি বারোক ও rococo স্থাপত্য শিল্পের এক অপূর্ব নমুনা – সত্যি শহরের মাঝে নজরে পড়ার মতোই এই দুই জমজ চার্চের উপস্থিতি।
চার্চের বাইরের সম্পূর্ণ বিশাল দেওয়াল জুড়ে যথারীতি পোর্তোর বিখ্যাত নীল রঙের Azulejos টাইলস দিয়ে বাইবেলের গল্প আঁকা, বিশেষ করে Our Lady of Carmo বিষয় নিয়েই এই চার্চের দেওয়াল সজ্জা – এই দেওয়ালের সুক্ষ টাইলস শিল্প বিশ্বের টুরিস্টদের রীতিমত আশ্চর্য করে দেয়, তাই অনেকেই রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে অবাক হয়ে টাইলস শিল্পের সুক্ষতাকে দেখে।
এই জমজ চার্চের সামনে দিয়ে চলে গেছে ট্রাম লাইন, বড় রাস্তা। শহরের ব্যস্ততার মধ্যেও এই জায়গা এক নিজস্ব গাম্ভীর্য, ঐতিহাসিকতা, ধূসরতা দিয়ে আকর্ষণ করে। এক অদ্ভুত পুরনো পরিবেশের প্রেক্ষাপটে আধুনিক জীবনের বয়ে চলা, প্রাচীনের মাঝে আধুনিক শহরের জীবন যাপনের ছবিই এই জায়গার মুখ্য আবেদন।
পোর্তো শহরের টুরিস্ট ম্যাপে এই জায়গার এতোই বিশদ বিবরণ দেওয়া, যে সামনের এক খেজুর গাছটিও সুন্দর করে ম্যাপে আঁকা – তাই O Porto শহরে বেড়াতে এসে টুরিস্টরা এই জমজ চার্চ ও তার দেওয়ালের অদ্ভুত শিল্প না দেখে ফিরে যাবে, তা কখনোই হতে পারে না – পথ চলতে চলতে কখন যে ‘ও পোর্তো’র এই বিস্ময়ের সামনে পৌঁছে যায় টুরিস্টরা, তা বোধহয় ওরা নিজেও জানে না।