গরমের সময়ে ফরাসী সমুদ্রের পাশের ফরাসী রেস্টুরেন্ট গুলোয় বসে জ্যান্ত ঝিনুক বা অয়েস্টার খুলে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস দিয়ে অয়েস্টারের নরম ভেতরের অংশ খাওয়া রীতিমত এক ফরাসী ডেলিকেসি – সামুদ্রিক অয়েস্টার তো নোনতা থাকেই, সঙ্গে লেবু মিশে এক টক-নুন মতো স্বাদ তৈরি হয়। যদিও অয়েস্টার রান্না করেও খাওয়া যায়, ফরাসীরা কিন্তু কাঁচা খেতেই পছন্দ করে।
সাধারণত বিশাল প্লেটে বরফের উপরে জ্যান্ত অয়েস্টার গুলোর খোলা গুলো খুলে পরিবেশন করা হয়। যত তাজা অয়েস্টার ততই নাকি ভালো – সেটায় এক্কেবারেই সামুদ্রিক বোটকা গন্ধ পাওয়া যায় না। কিন্তু, একটু পুরনো হয়ে গেলেই এক বিকট গন্ধে সম্পূর্ণ জায়গাটা ভরপুর হয়ে যায়। তাই ফরাসী রেস্টুরেন্টে এই বিখ্যাত ফরাসী ডেলিকেসি প্রচুর নিয়ম মেনেই পরিবেশন করা হয় – নিয়মের একটু এদিক ওদিক হলেই মুশকিল।
এখানে অনেক অয়েস্টার এক্সপার্ট জীবনের বেশীরভাগ সময় অয়েস্টার নিয়েই কাটিয়ে দেয় – ওরা গন্ধ শুঁকেই বলে দিতে পারে অয়েস্টারটি ভালো না মন্দ। অয়েস্টার নিয়ে ফরাসীদের মাতামাতি বিশেষ ভাবে লক্ষ্য করা যায় স্থানীয় বাজারে – অয়েস্টার মরশুমে বাজারে যখন অয়েস্টার ওঠে, নিমেষের মধ্যেই শেষ হয়ে যায়।
তুলুসের আশেপাশে, সমুদ্রের কাছাকাছি বসবাসরত অনেক ফরাসীদের প্রধান জীবিকা অয়েস্টার উৎপাদন। তুলুস থেকে একটু দূরে, সমুদ্রের পাশে গেলেই চোখে পড়ে মাইলের পর মাইল অয়েস্টার চাষ। ফ্রান্সে কয়েক শতাব্দী ধরে বিশেষ পদ্ধতিতে সমুদ্রের তীরে অয়েস্টার চাষ হয়ে এসেছে।
আর এখানে সমুদ্র তীরে সামার মানেই সমুদ্রের তীরে গিয়ে সামুদ্রিক খাওয়া দাওয়া, সমুদ্রের জলে গা ভাসানো, রোদ্র স্নান, আর জ্যান্ত অয়েস্টার খাওয়া, স্থানীয় স্বাদ নেওয়া – আর সেটাই ফরাসীদের ফরাসী জীবন যাপন – ‘ভি দে লা ফ্রন্স’।