নবম সতর্কতা – ইউরোপে নকল পুলিশ হতে সাবধান, ইউরোপের বেশ কয়েক জায়গায়, বিশেষ করে বার্সিলোনা ও ইতালির বেশ কয়েকটা শহরে মেয়ে ও ছেলেরা নকল পুলিশ সেজে, হঠাৎ টুরিস্টদের রাস্তা আটকে বলতে পারে – পাসপোর্ট বা কোন পরিচয়পত্র দেখান। টুরিস্ট হয়তো সরল মনে পাসপোর্ট বের করে ঐ পুলিসগুলোর হাতে দিয়ে দিল। ব্যস, পাসপোর্ট একবার ওদের হাতে চলে গেলে ফেরত নিতে মোটা টাকার জরিমানা না দিলে ফিরে পাওয়া খুবই মুশকিল। সাধারণত, ইউরোপের রাস্তায় এমনি হুট হাট করে পাসপোর্ট চেক করে না, আর এই ধরণের নকল পুলিশদের কাজ কারবার সব একটু শুনশান নির্জন গলিতেই হয়।
নকল পুলিশদের এই ধরণের পাসপোর্ট হাতানোর গল্প বোধহয় টুরিস্টরা প্রায় সবাই জানে – সেবার জাগ্রেব থেকে বাসে হাঙ্গেরি যাওয়ার পথে হাঙ্গেরির সীমানায় বাসের সব টুরিস্টদের পাসপোর্ট হাঙ্গেরির সীমান্তরক্ষীরা নিয়ে নিল, আমরা চুপচাপ বাসেই বসেছিলাম, কিন্তু, একদল জাপানি দেখি ঐ পুলিশদের পিছু নিয়েছে, যতক্ষণ পুলিশরা আমাদের ভিসা চেক করছিল, ওরা ঐখানে দাঁড়িয়েই ছিল। অবশ্য, ওরা আসল পুলিশই ছিল। যতই হোক, সাবধানের তো মার নেই।
দশম সতর্কতা – ইউরোপের কোন এক নির্জন গলির মোড়ে একদল ছেলে বলতেই পারে, ঐ বিল্ডিংএর সঙ্গে আমাদের একটা ফটো তুলে দিন প্লিজ। এই ক্ষেত্রে, না বলাই ভালো। আমাদের এক বন্ধুর সঙ্গেই বার্লিনে ঠিক এমনি এক ঘটনায় তার সমস্ত টাকা পয়সা, পাসপোর্ট, সঙ্গের জিনিসপত্র, এমনকি ফেরার টিকিটটিও খোয়াতে হয়েছে – ওকে একদল ছেলে বার্লিনের একটু নির্জন গলির কাছে বলেছিল, আমাদের একটা ফটো তুলে দিন। বন্ধুটি যখন ওদের ফটো তুলতে ব্যস্ত, তখনই ওর সমস্ত জিনিসপত্র ছিনিয়ে নিল।
যাইহোক, পৃথিবীর সব জায়গাই ভালো খারাপ মিশিয়েই তৈরি হয়েছে, আর ভালোকে রেখে খারাপ বর্জন করাই যখন পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষের উদ্দেশ্য, ইউরোপ ভ্রমণের ক্ষেত্রে ঐ ছিঁচকে ঝামেলা গুলো এড়িয়ে ও বাদ দিয়ে চলাই ভালো। যতই হোক, গোলাপ গাছেও তো কাঁটা থাকে। তাছাড়া, ইউরোপের যে কোন শহরে যাওয়ার আগে শহরের কোন অঞ্চলে, একটু রাতের দিকে যাওয়া উচিত নয়, কোন দিক টুরিস্টদের জন্যে সুরক্ষিত নয় – সেই বিষয়ে ইন্টারনেট ঘেঁটে একটু জেনে নেওয়া ভালো, তাহলেই, ইউরোপ ভ্রমণের অভিজ্ঞতা জীবনের শ্রেষ্ঠ, স্মরণীয় অভিজ্ঞতা হয়ে রয়ে যায়, নয়তো, সব ভালোর শেষেও একটু যেন তেতো স্বাদের রেশ রয়ে যায় মনে।