ষষ্ঠ সতর্কতা – ইউরোপে রাতের ট্রেন গুলোতে খুবই সাবধান হতে হয়। ইউরোপের ছিঁচকে চোররা জানে ইন্ডিয়ানরা সোনা পড়ে, আমাদেরই জানাশোনা এক ভদ্রমহিলা – মিউনিখ থেকে রাতের ট্রেনে জুরিখ যাওয়ার সময়ে কখন যে চলন্ত ট্রেনে চোর ওনার ব্যাগ থেকে সোনার দুটো বালা চুরি করে নিল – তিনি বুঝতেই পারলেন না। তাই ইউরোপের পথে সোনা বা দামী গহনা পড়া একদমই উচিত নয়। দেশ উন্নত হলে কি হয়? মানুষের স্বভাবের ধরণ তো আর বদলে যায় না, একই থাকে – তাই সাবধানতা সব সময় নিজেকেই নিতে হয়।
সপ্তম সতর্কতা – সাধারণত ইউরোপের বিখ্যাত ক্যাথিড্রালের সামনে কোন ব্যস্ত, ত্রস্ত অল্পবয়সী মা এসে, তার কোলের কান্নারত বাচ্চা এগিয়ে ধরে বলতে পারে – একটু ধরুন, আমি ওর দুধের বোতল খুঁজছি। না, ইউরোপে কেউই নিজের বাচ্চা অচেনা টুরিস্টকে ধরতে বলে না, কাজেই দয়া বশতও বাচ্চা ধরা উচিত নয়। কারণ ঐ বাচ্চা আদান প্রদানের সময়েই কিন্তু আসল ঘটনা ‘পকেটমারি’ ঘটে যাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা, এই ক্ষেত্রে বাচ্চটিও কিন্তু ঐ মায়ের নিজের নয়। সবই টুরিস্টদের পকেটমারার জন্যে এক ছোট্ট সাজানো নাটক।
অষ্টম সতর্কতা – সাধারণত স্পেনে অনেক মধ্যবয়সী রোমা মহিলারা ছোট্ট ছোট্ট ফুলের তোড়া নিয়ে ঘোরে, আর টুরিস্টদের দিকে এগিয়ে দেয় – বলে, লাকি ফুল। সাবধান, কেউই যদি ভুলেও ঐ ফুলের তোড়া ছুঁয়ে ফেলে, পাঁচ ইউরো থেকে নিয়ে কুড়ি ইউরো – কি দাম ওরা হাঁকবে কেউই জানে না। কাজেই ওদের এড়িয়ে চলাই ভালো। আসলে ইউরোপের রাস্তায় আইনত ভাবে সত্যিকারের সুভ্যেনির যারা বিক্রি করে তারা, সঠিক দামের স্টিকার লাগিয়েই বিক্রি করে – অহেতুক আজেবাজে দামে ওরা বিক্রি করতে পারে না, কিন্তু যারা দামের কোন স্টিকার লাগায় না, তাদের কাছে তো কোন জিনিস কেনাই উচিত নয়।
তা বলে, ইউরোপে শুধুই কি পকেটমাররা ঘুরে বেড়ায়? না ইউরোপে এমনও দেশ আছে যেখানে এখনো লোকেরা দরজায় তালা মারে না। ক্রোয়েশিয়া এমন এক দেশ যেখানে কোন ছিঁচকে চোর, পকেটমার নেই – টুরিস্টরা এখানে নিশ্চিন্তে, নির্ভয়ে ঘুরে বেড়াতে পারে – সেই বিষয়ে ক্রোয়েশিয়া সরকারের টুরিস্ট কর্তৃপক্ষ কড়া ব্যবস্থা নেয়, বিদেশী টুরিস্টদের সম্পূর্ণ সুরক্ষা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় ওদের সরকার। ক্রোয়েশিয়ার দুব্রভনিক বা স্প্লিট শহর কেন্দ্রে টুরিস্টদের জন্যে, দীর্ঘ নিশ্চিন্ত নাইট লাইফ বোধহয় ইউরোপের অন্য কোন শহরে হতে পারে না।
চলবে