ইউরোপ ভ্রমণ, কিছু সতর্কতা – দুই (Europe Travel Tips)

তৃতীয় সতর্কতা – ইউরোপের পথে যতটা সম্ভব সাধারণ পোশাক আশাক পড়া উচিত। একটু রঙচঙে, অন্যরকম উজ্জ্বল পোশাকে টুরিস্ট ভাব প্রকাশ করলেই, পকেটমার পিছু নেওয়ার খুবই সম্ভাবনা থাকে। তাছাড়া, ভিড় মেট্রোয় নিজের ক্যামেরার ব্যাগ থেকে শুরু করে সমস্ত জিনিস সামনে রাখা খুবই জরুরি – ভিড় মেট্রোয় তাই অনেকেই পিঠের ব্যাগ সামনে ঝোলায়।

অনেক সময়ই বার্সিলোনা, রোম, নেপলসের ট্রেনে পকেটমারের দল টুরিস্টদের সামনে অহেতুক ভিড় সৃষ্টি করে, টুরিস্টদের কাছ থেকে যা পাওয়া যায় তাই, ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। আর ইউরোপে তো পকেটমারের গায়ে টুরিস্টের হয়ে কেউই হাত তুলবে না – সবার চোখের সামনেই পকেটমার টুরিস্টটের পকেট মেরে পালিয়ে যাবে, এই ক্ষেত্রে ইতালি বা স্পেনের পুলিশও হালছাড়া গোছের। তাই সমস্ত সাবধানী সতর্কতা টুরিস্টকেই নিতে হয়।

চতুর্থ সতর্কতা – ইউরোপে কোন মনুমেন্টের সামনে কাউকে ক্যামেরা দিয়ে ফটো তুলতে বলার আগে খুব ভালো ভাবে পর্যবেক্ষণ করা উচিত, যাকে ক্যামেরা দিচ্ছি, সে কেমন। সাধারণত, ইউরোপে কেউই গায়ে পড়ে উপকার করতে আসে না, তাই যখনই কেউ গায়ে পড়ে এসে জিজ্ঞেস করবে – আপনাকে একটা ফটো তুলে দি? সন্দেহ করাই উচিত।

এই ক্ষেত্রে কি হয়? ক্যামেরা তো দিয়ে দিলাম, সে ফটোও তুলে দিল, কিন্তু, পরে সে আর ক্যামেরা ফেরত দিতে চাইবে না, বলবে – কি প্রমান আছে ক্যামেরাটি আপনার? টুরিস্ট যুক্তি দেবে – ক্যামেরার ফটো গুলো তো আমি তুলেছি। সে, ডেটা কার্ড বের করে ফেলে দিয়ে বলবে – এখন? কি প্রমান?

ব্যস, ঐ ক্যামেরা ওর হাত থেকে ফেরত নিতে হলে বেশ মোটা টাকার জরিমানা দিতে হয়। অনেক ক্ষেত্রে ক্যামেরার সমপরিমাণ দামের কাছাকাছি দাম দিয়েও ক্যামেরা ছাড়ানোর কথা শোণা গেছে। তাই ক্যামেরা দেওয়ার আগে দেখে নেওয়া উচিত সে সত্যি টুরিস্ট কিনা, সত্যিকারের টুরিস্টকেই ক্যামেরা দিয়ে বলা উচিত – আমাকে একটা ফটো তুলে দিন, প্লিজ।

পঞ্চম সতর্কতা – পথ চলতি একদল রোমা মেয়ে পথ আটকে একটা পুরনো কাগজ, তাতে এক দুটো পুরনো সই দেখিয়ে বলতে পারে – একটা সই করে দিন, খুবই মহৎ উদ্দেশ্যে আমরা সবার কাছ থেকে সই সংগ্রহ করছি- ইত্যাদি।

ভুলেও কৌতূহলী হয়ে কাগজে কি লেখা আছে, জানতে বা দেখতে চাইলেই কিন্তু মুশকিল। টাকা চেয়ে বসবে – যতক্ষণ না দেওয়া হয়, পিছু নেবে, বিরক্ত করবে। তারপর নিজেদের ভাষায় বক বক করবে, চিৎকার করবে, কাজেই ওদের প্রথমেই এড়িয়ে চলতে হয়। সাধারণত এই ধরণের সই করানোর জন্যে রোমা দল ব্রাসেলসে ঘুরে বেড়ায়। ইউরোপে এক এক জায়গায় রোমাদের টাকা চাওয়ার এক এক রকম ধরণ। সাধারণত ওরা দল বেঁধে কাজ করে, একজনের সঙ্গে টুরিস্টদের কোন গণ্ডগোল হলেই দলের অন্যরা জড়ো হয়ে যায়।

বি বি সির একটা ডকুমেন্টারিতে দেখেছিলাম, যেখানে রোমা জিপসিরা কিভাবে লন্ডনের পথে পথে পাউন্ডে ভিক্ষা করে করে রোমানিয়ায় গিয়ে প্রাসাদের মতো বাড়ী বানিয়ে বসবাস করছে।

চলবে

অজানা's avatar

About abakprithibi

I see skies of blue and clouds of white, The bright blessed day, the dark sacred night And I think to myself what a wonderful world...........
This entry was posted in Europe, Travel and tagged , , . Bookmark the permalink.

এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান