পর্তুগীজদের কাছে আবিষ্কারের স্বর্ণ যুগটি বড়ই অহংকারের সময় ছিল, আজও বোধহয় ওরা সেই গর্বে গর্বিত। সেই সময়ে পর্তুগালের ব্যবসা বানিজ্যের প্রচুর প্রসার হয়েছিল, অর্থনীতিতে জোয়ার এসেছিল। আর সেই স্বর্ণ যুগকে মনে রেখে পর্তুগীজ বিংশ শতাব্দীর গোরার দিকে বিশ্ব মেলায় প্রদর্শনের জন্যে তৈরি হয়েছিল বিশাল এই স্মৃতিস্তম্ভ – Padrão dos Descobrimentos।
লিসবন শহরকে জড়িয়ে আছে বিস্তৃত Tagus নদী। আর এই নদী তীরের বালেম অঞ্চলেই পনেরো থেকে ষোল শতাব্দীতে সমুদ্র পথে পর্তুগীজদের আবিষ্কারের স্বর্ণযুগের সূচনা হয়েছিল বলা যায়। আর আজও সেই স্বর্ণযুগের নামী, অনামী বহু নাবিক, যারা দুঃসাহসিক সমুদ্র অভিযানে গিয়েছিল ও ভারতবর্ষের সঙ্গে মসলার ব্যবসার জন্যে জাহাজ নিয়ে সমুদ্র পথে পাড়ি দিয়েছিল, তাঁদের কথা স্মরণ করায় Padrão dos Descobrimentos স্মৃতি স্তম্ভ।
বিশাল এই স্মৃতি স্তম্ভটি নদীর দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে আছে। স্মৃতি স্তম্ভটি এক বিশাল জাহাজের মডেলের উপরে পর্তুগীজ স্বর্ণযুগের তেত্রিশ জন বিখ্যাত নাবিকদের স্ট্যাচু, জাহাজের একদম শুরুর দিকের প্রথম স্ট্যাচুটি পনেরো শতাব্দীর পর্তুগীজ আবিষ্কারের স্বর্ণ যুগের পুরোধা Henry the Navigator এর, হাতে তার সেই সময়ের পর্তুগীজ জাহাজের এক মডেল, তাকে অনুসরণ করে বাকি নাবিকদের স্ট্যাচু – এখন এই স্মৃতি স্তম্ভটিকে লিসবনের অন্যতম ল্যান্ডমার্কও বলা যেতে পারে।
এখানে এসে একদিকে দূরে দেখা যায় Tagus নদীর বুকে লিসবনের ঝুলন্ত সেতু 25 de Abril Bridge, আর আরেকদিকে বালেম অঞ্চলের বিস্তার, নদীর বুকে ছিপ ফেলে বসে থাকা পর্তুগীজ লোক – মাছ ধরাটা বোধহয় এদের অন্যতম বিনোদন বা নেশা, তীরে দাঁড়িয়ে থাকা প্রচুর ছোট ছোট জাহাজ, মাছ ধরার নৌকো – বেশ এক শান্ত পরিবেশ। হালকা চালে পা ফেলে প্রচুর টুরিস্ট এদিকে ঘোরাঘুরি করতে পছন্দই করে।
Tagus নদীর এই অঞ্চল থেকেই ভারতবর্ষের উদ্দ্যেশে অনেক পর্তুগীজ জাহাজ পাড়ি দিত সেই সময়ে, আর এই স্মৃতি স্তম্ভের নীচে পাথুরে চত্বরের বুকে বিশাল ম্যাপে পর্তুগাল থেকে ভারতের দিকে ঠিক যে পথ ধরে ভাস্কো দা গামা ভারতবর্ষ আবিষ্কার করেছিলন সেই সমুদ্র পথের দিগ নির্দেশ আঁকা দেখে টুরিস্টদের সেই আবিষ্কারের স্বর্ণযুগের কথা মনে রাখতেই হয়।
প্রতিটি জায়গার এক নিজস্ব ইতিহাস আছে, গল্প আছে, প্রবাদ আছে আর সেই সমস্ত ঐতিহ্য, ইতিহাস, গল্প যেন ইউরোপের এই জায়গা গুলো চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে জানে। কি ভাবে নিজেদের নিজস্বতা, স্বকীয়তা নিয়ে গর্ব করতে হয় তা বোধহয় ইউরোপিয়ানদের চেয়ে বেশী আর কেউ জানে না।
Reblogged this on Travels with Mary and commented:
Fabulous!
Nice to know that you liked my post and re-blogged. Thank you for re-blogging and comment.
You are most welcome
I have been checking out some of your stories and i can claim nice
stuff. I will definitely bookmark your blog.